হাকিমপুরের বেশির ভাগ সরকারি কার্যালয় ছিল বন্ধ
সরকারের নির্বাহী আদেশে আজ শনিবার সরকারি কার্যালয় খোলা থাকার কথা। কিন্তু দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলা পরিষদের বেশির ভাগ সরকারি কার্যালয় তা মানেনি। একাধিক সরকারি কার্যালয়ে তালা ঝুলতে দেখা যায়।
আজ শনিবার দুপুর ১২টার দিকে সরেজমিনে বিভিন্ন সরকারি কার্যালয়ে এসব দৃশ্য দেখা যায়।
হাকিমপুর উপজেলা পরিষদের নিচতলায় হাতের বাঁ পাশে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয়। কিন্তু ওই কার্যালয়ে ছিল তালা লাগানো। ওই কার্যালয়ের পাশের কক্ষটি খোলা থাকলেও সেখানে ঘুমাতে দেখা গেছে কার্যালয়ের পিয়নকে।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ও উপজেলা যুব উন্নয়ন কর্মকর্তার কার্যালয় দুটি পাশাপাশি। ওই দুই কার্যালয়ে ঝুলছিল তালা। সেখানে কার্যালয় সংশ্লিষ্ট কেউ উপস্থিত ছিলেন না।
উপজেলা সমবায় কর্মকর্তার কার্যালয় খোলা ছিল। কিন্তু সমবায় কর্মকর্তা কাউসার রহমান সেখানে ছিলেন না। কাউসার রহমানের বিরুদ্ধে নিয়মিত কার্যালয়ে না আসারও একাধিক অভিযোগ আছে।
পাওয়া যায়নি উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তা আবদুস সালামকে। আর কার্যালয়ে না আসার একাধিক অভিযোগ আছে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছা. শামীমা নাজনীনের বিরুদ্ধে। অভিযোগ আছে, তিনি উপজেলা পরিষদের বাসায় থাকলেও নিয়মিত কার্যালয়ে আসেন না।
কার্যালয় সংশ্লিষ্ট একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন, অসুস্থতার কথা বলে বাসায় বসে কার্যালয়ের টুকিটাকি কাজ সেরে নেন এই কর্মকর্তা।
দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলা পল্লী দারিদ্র্য বিমোচন কর্মকর্তার কার্যালয়ের তালা খুলতে দেখা যায়।
উপজেলা পরিষদ চত্বরে কথা হয় উপজেলার ছাতনী গ্রামের বাসিন্দা আলেক হোসেন ও জালালপুরের নজিবর রহমানের সঙ্গে। উভয়ে জানালেন, বেলা পৌনে ১১টার দিকে জমি সংক্রান্ত ব্যাপারে উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে যান তাঁরা। কিন্তু সাব-রেজিস্ট্রার না থাকায় ১২টার দিকে ফিরে যাচ্ছেন।
সমবায় কার্যালয়ে গিয়েও কর্মকর্তা না থাকায় ফিরে যান খাট্টা উছনা গ্রামের সাইফুল ইসলাম। ফলে তাঁরা আট-দশ মাইল দূর থেকে কষ্ট করে এসেও কাঙ্ক্ষিত সেবা পাননি।
উপজেলা পরিষদের তিনটি কার্যালয়ের একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ঈদ উপলক্ষে সরকার নির্বাহী আদেশে গত ৪ জুলাই ছুটি ঘোষণা করেছিল। এর পরিবর্তে ১৬ জুলাই শনিবার কর্মদিবস হিসেবে অফিস খোলা রাখার নির্দেশ দিয়েছিল। কিন্তু এই আদেশ মানেননি উপজেলা পরিষদের অনেক কর্মকর্তা। তাঁরা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সপ্তাহের রোববার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত এই পাঁচ দিনের মধ্যে তিনদিনও অনেক কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা কার্যালয়ে যান না।
এ বিষয়ে জানতে কথা হয় উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মো. কাউসার রহমানের সঙ্গে। তিনি ফোনে বলেন, ‘আমি কার্যালয়ে ছিলাম। কিন্তু বাসায় কাজের জন্য ব্যস্ত ছিলাম। এ সময়ের মধ্যে হয়তো আমাকে পাননি।’
আর উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা জগন্ময় রায় বর্মণ বলেন, ‘অসুস্থ থাকায় অফিসে যেতে পারিনি। অফিসে তেমন কাজও ছিল না। তাই অফিসে আসা হয়নি।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছা. শামীমা নাজনীনসহ অনেকের ফোনে চেষ্টা করেও তাঁদের বক্তব্য জানা যায়নি।
এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শুকরিয়া পারভীন তিনদিনের জন্য প্রশিক্ষণে থাকায় তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।