রিকশাচালকের টাকা ফেরত দিল পুলিশ, কনস্টেবল ক্লোজড
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে এক রিকশাচালকের কাছ থেকে ২০০ টাকা উৎকোচ নেওয়ার অভিযোগে রাজীব হোসেন নামের এক ট্রাফিক পুলিশের কনস্টেবলকে ক্লোজ করা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে শ্রীমঙ্গল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুর রহমান জানান, পুলিশ কনস্টেবল রাজীব হোসেন ও রিকশাচালক শফিক মিয়াকে মুখোমুখি করা হলে প্রাথমিকভাবে অভিযোগ প্রমাণ পাওয়া যায়। যে কারণে পুলিশ কনস্টেবলকে শ্রীমঙ্গল থানা থেকে ক্লোজ করে মৌলভীবাজার পুলিশ লাইনে পাঠানো হয়।
শ্রীমঙ্গল শহরের বিরাইপুর এলাকার বাসিন্দা রিকশাচালক শফিক মিয়া (২২) জানান, গত বুধবার দুপুরে শ্রীমঙ্গল শহরের ভানুগাছ রোড দিয়ে যাত্রী নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ তাঁকে দাঁড়ানোর জন্য হাত দেখায়। শফিক মিয়া রিকশা দাঁড় করালে পুলিশ উৎকোচ দাবি করে এবং না দিলে রিকশাসহ থানায় ধরে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেয়। এ সময় তিনি চাল কেনার ১৫০ টাকা পুলিশকে দিলে পুলিশ অসন্তুষ্ট হয়ে অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে। পরে শফিক মিয়া তাঁর পরিচিত অন্য রিকশাচালকের কাছ থেকে ৫০ টাকা ধার করে এনে ২০০ টাকা পুলিশের হাতে দিয়ে ছাড়া পান।
এ ব্যাপারে স্থানীয় এক সাংবাদিক জানান, সকালে চাল কেনার জন্য একটি রিকশায় চড়ে বাজারে গিয়ে চাল কিনে আবার ওই রিকশায় উঠলে চালক তাঁকে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘দাদা, আপনি তো চাল কিনলেন, কিন্তু আমি তো চাল কিনতে পারলাম না। আমার চাল কেনার টাকা পুলিশ নিয়ে গেছে।’ ওই সাংবাদিক রিকশাচালকের ঘটনাটি শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এম ইদ্রিস আলীকে অবহিত করলে তিনি তাৎক্ষণিক পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ শ্রীমঙ্গল থানার ওসির নজরে আনেন।
পরে শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক স্থানীয় সাংবাদিকদের নিয়ে থানায় গেলে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোল্লা মোহাম্মদ শাহীনের উপস্থিতিতে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ট্রাফিক কনেস্টবল রাজীব হোসেনকে ক্লোজ করে মৌলভীবাজার পুলিশ লাইনে পাঠানো হয়। সে সঙ্গে অসহায় রিকশাচালকের ২০০ টাকা ফেরত দেন অভিযুক্ত পুলিশ কনস্টেবল।
সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোল্লা মোহাম্মদ শাহীন বলেন, ‘পুলিশ সুপারের নির্দেশে আমরা ঘটনাটি অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে নিয়েছি। এ ধরনের ঘটনা ক্ষমার অযোগ্য। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’