যৌন হেনস্তা : ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের নতুন কাণ্ড
যৌন হেনস্তার অভিযোগ থেকে বাঁচতে তিন কর্মীর কাছ থেকে জোরপূর্বক স্বীকারোক্তি আদায়ের অভিযোগ উঠেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সদ্য বহিষ্কৃত নেতা নিশাত ইমতিয়াজ বিজয়ের নামে। অভিযোগ তুলেছেন অভিযুক্ত অন্য তিন ছাত্রলীগকর্মী।
আজ শনিবার ‘মিথ্যা অভিযোগ’ থেকে অব্যাহতি পেতে এবং ‘প্রকৃত’ দোষীদের শাস্তির দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ জমা দিয়েছেন ওই ছাত্রলীগকর্মীরা। এরা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী।
গতকাল শুক্রবার সাময়িক বহিষ্কৃত আট শিক্ষার্থীর মধ্যে তাঁরাও আছেন বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
লিখিত অভিযোগে তিন ছাত্রলীগকর্মী উল্লেখ করেন, ‘১৪ এপ্রিল সন্ধ্যায় ছাত্রী লাঞ্ছনার ঘটনার সময় আমরা হলে অবস্থান করছিলাম। ঘটনার সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। ১৫ এপ্রিল হলের বড় ভাই নিশাত ইমতিয়াজ বিজয় (জার্নালিজম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগ, ৪২তম ব্যাচ) আমাদের জোরপূর্বক প্রীতিলতা হলের সামনে নিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার স্বীকারোক্তি আদায় করে। সেখানে নিশাত ইমতিয়াজ বিজয় আমাদের ওই মেয়ের সামনে দাঁড় করায় এবং বলে তারা এ ঘটনায় ছিল। এ সময় আমাদের নাম-পরিচয় জানাতে চাইলে আমরা পরিচয় দিই। পরে মাফ চাইতে বলার পর অস্বীকার করলে সবার সামনে আমাদের মারধর করে হলের সামনে থেকে নিয়ে আসা হয়।’
লিখিত অভিযোগ পাওয়ার কথা সরাসরি স্বীকার না করে প্রক্টর অধ্যাপক তপন কুমার সাহা এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে পারব না। লিখিত অভিযোগ পেয়ে থাকলে তা যৌন নিপীড়নবিরোধী সেলে পাঠানোর নিয়ম রয়েছে।’
এ বিষয়ে জানতে উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
নিশাত ইমতিয়াজ বিজয় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সদ্য বহিষ্কৃত কার্যকরী সদস্য। ছাত্রী লাঞ্ছনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বৃহস্পতিবার বিকেলে বিজয়সহ পাঁচ নেতা-কর্মীকে বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ।
অভিযোগের বিষয়ে নিশাত ইমতিয়াজ বিজয় মুঠোফোনে এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আসলে এখানে একটা ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি হয়েছিল।’ ঘটনার সময় ওই তিনজন উপস্থিত ছিলেন না বলে স্বীকার করেছেন বিজয়।
মঙ্গলবার পহেলা বৈশাখের সন্ধ্যায় পাঁচ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীর হাতে যৌন নিপীড়নের শিকার হন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪৩তম ব্যাচের এক আদিবাসী ছাত্রী। বৃহস্পতিবার যৌন নিপীড়নের শাস্তির দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও উপাচার্যের কাছে পৃথক লিখিত অভিযোগ দেয় ওই ছাত্রী। ঘটনায় সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগে শুক্রবার একক ক্ষমতাবলে আট শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার করেছেন উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম।