নারায়ণগঞ্জে পুলিশ হত্যা : ৩৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ থানা এলাকায় পুলিশ কনস্টেবল হত্যার ঘটনায় আটজনের নাম উল্লেখসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে উপপরিদর্শক (এসআই) আল আমিন তালুকদার বাদী হয়ে এ মামলা করেন। তবে এখনো কোনো আসামি গ্রেপ্তার হয়নি।
এ ছাড়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মতিয়ার রহমানকে প্রধান করে তিন সদস্যের এ তদন্ত কমিটি করেছে জেলা পুলিশ। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন—বি সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার ফোরকান সিকদার ও ডিআই ওয়ান মামুনুর রশিদ। কমিটিকে তিন দিনের মধ্যে তদন্তের রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
নিহত পুলিশ সদস্য আরিফের জানাজা বাদ জোহর জেলা পুলিশ লাইনে সম্পন্ন হয়েছে। এরপর নিজ বাড়ি মানিকগঞ্জের সুসন্ধ্যা গ্রামে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
গতকাল বুধবার বিকেলে সোনারগাঁ পৌরসভার রাইজদিয়া গ্রামে ব্যবসায়ীকে পানিতে ডুবিয়ে হত্যার অভিযোগে সোনারগাঁ থানার এক কনস্টেবলকে পিটুনি দিয়ে পানিতে ডুবিয়ে হত্যা করে এলাকাবাসী। নিহত ব্যবসায়ীর নাম আবদুল মতিন (৫০)। নিহত পুলিশ কনস্টেবলের নাম আরিফুর রহমান (৪৫)। তাঁর ব্যাচ নম্বর ৬০৭।
মতিন সোনারগাঁ পৌরসভার রাইজদিয়া গ্রামের মোসলেহ উদ্দিনের ছেলে। আর কনস্টেবল আরিফুর রহমান মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার সুসন্ধ্যা এলাকার বজলুল খানের ছেলে।
এ বিষয়ে সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মঞ্জুর কাদের জানান, বুধবার ঘটনার সময় কিছু লোক হত্যাকাণ্ডে লিপ্ত হয়, আবার কিছু লোক মোবাইলে সেই চিত্র ধারণ করে। মোবাইলে ধারণ করা সেসব ফুটেজ সংগ্রহ করার চেষ্টা চলছে। ফুটেজ দেখে আসামি শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হবে।
এ বিষয়ে গতকাল পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়, মাদক মামলার আসামি মতিনকে ধরতে পুলিশ অভিযান চালায়। ওই সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে মতিন দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় পানিতে ঝাঁপ দেন। তার পর পানিতে তলিয়ে যান। মতিনের মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী পুলিশ সদস্যদের ওপর হামলা চালায়। তারা কনস্টেবল আরিফকে পিটুনি দিয়ে পানিতে চুবিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় এক কর্মকর্তাসহ তিন পুলিশ সদস্য আহত হন।
তবে নিহত ব্যবসায়ী ও পরিবারের অভিযোগ, বিকেলে সোনারগাঁ থানা পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) ফখরুল মিয়া কনস্টেবল আরিফুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে সাদা পোশাকে মোটরসাইকেলে করে রাইজদিয়া গ্রামে যান। তাঁরা পান-সুপারির ব্যবসায়ী আবদুল মতিনকে মাদক ব্যবসায়ী আখ্যা দিয়ে গ্রেপ্তার করার চেষ্টা করেন। মতিন ভয়ে পুকুরের পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়েন। কনস্টেবল আরিফুর রহমান তাঁকে আটক করতে পুকুরে ঝাঁপ দেন। এ সময় আরিফুর ও মতিনের মধ্যে ধস্তাধস্তি হয়। মতিন পুকুরের পানিতে তলিয়ে গিয়ে সঙ্গে সঙ্গে মারা যান। খবর পেয়ে এলাকাবাসী একত্র হয়ে পুলিশ কনস্টেবল আরিফুর রহমানকে আটক করে গণপিটুনি দেওয়ার পর তিনি মারা যান।