‘দুদক আস্থার জায়গা অর্জন করতে পারেনি’
বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) মানুষের আস্থার জায়গাটি অর্জন করতে পারেনি। বেসরকারি সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়।
গতকাল রোববার নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে টিআইবি গবেষণার ফল তুলে ধরে। দুদকের ২০১৩ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত তিন বছরের সব কার্যক্রম ও কর্মপরিধির তথ্য নিয়ে পর্যালোচনামূলক গবেষণাটি করে টিআইবি।
সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির পক্ষ থেকে জানানো হয়, এই গবেষণা দুদক একশর মধ্যে সার্বিকভাবে ৬১.২২ নম্বর পেয়েছে, যা তাদের মূল্যায়নে 'মধ্যম' মান, ৬৭ পেলে তা হতো উচ্চ মানের। গবেষণায় ৫০টি নির্দেশকের মধ্যে ৩২টিতে দুদক 'উচ্চ ও মধ্যম' স্কোর পেলেও নয়টিতে পেয়েছে 'নিম্ন' স্কোর। এর একটি হলো, দুদক কার্যক্রম সম্পর্কে জনগণের আস্থা একেবারে কম।
সংবাদ সম্মেলনে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘যাঁরা দুর্নীতি করেন, তাঁদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া সম্ভব—এ বার্তা এখনো পৌঁছেনি মানুষের কাছে। যার ফলে মানুষের ধারণা অনুযায়ী দুদক আস্থার জায়গাটি অর্জন করতে পারেনি।’
তারপরও এ গবেষণা ফলকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে টিআইবি। দুদকের আইনি স্বাধীনতার সূচকে শক্ত অবস্থান হলেও পর্যালোচনায় এসেছে, রাজনৈতিক হয়রানি করার জন্য দুদককে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয় বলে একটা ধারণা আছে।
টিআইবির ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান সুলতানা কামাল বলেন, ‘সমাজে যদি দুর্নীতি প্রতিরোধ না হয়, দুর্নীতি দমন যদি আইনি প্রক্রিয়ায় না হয়, তখন কিন্তু মানুষের মধ্যে যে মরিয়া ভাবটা আসে, সেটা আবার সরাসরি মানুষের মানবাধিকার, মানুষের নিরাপত্তা, মানুষের অন্যান্য জীবনযাত্রার যে কতগুলো নিয়মকানুন আছে, তার ওপর একটা নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।’
তদারকি, জবাবদিহি, কমিশনার নিয়োগসহ ছয়টি ক্ষেত্রে দুদকের স্বচ্ছতা আনতে সুপারিশ দেয় টিআইবি।