জামিনের পর ফের গ্রেপ্তার গাজীপুরের বরখাস্তকৃত মেয়র
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের (জিসিসি) সাময়িক বরখাস্তকৃত মেয়র ও বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যাপক এম এ মান্নানকে জয়দেবপুর থানার নাশকতার একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
গতকাল বুধবার গাজীপুরের মুখ্য মহানগর হাকিমের (সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট) আদালতে শুনানি শেষে বিচারক এম এ মান্নানকে গ্রেপ্তারের আদেশ দেন।
এ নিয়ে মান্নানের বিরুদ্ধে ২৬টি মামলা হয়েছে। আদালত থেকে ২৫ মামলায় তিনি এরই মধ্যে জামিন পেয়েছেন। সর্বশেষ দুদকের দায়ের করা মামলায় গতকাল হাইকোর্ট থেকে জামিন পান তিনি। এর পরপরই একই দিন তাঁকে আরেকটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো।
গাজীপুর আদালতের পরিদর্শক (ইন্সপেক্টর) মো. রবিউল ইসলাম জানান, বিএনপি-জামায়াতের অবরোধ চলাকালে নাশকতা সৃষ্টির জন্য বাস-ট্রাকে পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করে জানমালের ক্ষতিসাধনের জন্য গত বছরের ২৭ জানুয়ারি বিকেলে গাজীপুর মহানগরের ভুরুলিয়া এলাকায় গোপন বৈঠক করছিল জামায়াত-বিএনপির নেতাকর্মীরা। ওই খবরের ভিত্তিতে পুলিশ সেখানে অভিযান চালায়। এ সময় পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে জেলা জামায়াতের আমির আবুল হাশেম ও মহানগর জামায়াতের অর্থবিষয়ক সম্পাদক নাসরুল্লাহকে ১০টি পেট্রলবোমাসহ আটক করলেও অন্যরা পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় উপপরিদর্শক (এসআই) মনির হোসেন বাদী হয়ে জামায়াত-বিএনপির ১০ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাত আরো ১০-১৫ জনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে জয়দেবপুর থানায় মামলা করেন।
পরে মামলার তদন্তকালে ওই ঘটনার সঙ্গে অধ্যাপক এম এ মান্নানের বিরুদ্ধে জড়িত থাকার তথ্য পাওয়া যায়। এসব তথ্যের ভিত্তিতে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই জহিরুল ইসলাম ওই মামলায় তাঁকে (এম এ মান্নান) গ্রেপ্তারের জন্য বুধবার আদালতে আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিকেলে শুনানি শেষে গাজীপুরের মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক আবদুল হাই ওই আবেদন মঞ্জুর করে এম এ মান্নানকে গ্রেপ্তার দেখান (শ্যোন অ্যারেস্ট)।
অধ্যাপক এম এ মান্নানের আইনজীবী মঞ্জুর মোর্শেদ প্রিন্স জানান, সর্বশেষ বুধবার হাইকোর্ট থেকে জয়দেবপুর থানায় দায়ের করা দুদকের একটি মামলায় জামিন লাভ করেন অধ্যাপক এম এ মান্নান। এরপর বুধবারই তাঁকে জয়দেবপুর থানার আরো একটি নাশকতার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলো।
অধ্যাপক এম এ মান্নানকে গাজীপুরে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-১-এ রাখা হয়েছে। তিনি বিএনপির সদ্যঘোষিত জাতীয় নির্বাহী কমিটিতে ভাইস চেয়ারম্যান পদে মনোনীত হয়েছেন।
গত বছরের ৪ ফেব্রুয়ারি রাতে গাজীপুরে যাত্রীবাহী বাসে পেট্রলবোমা হামলার মামলায় একই বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় রাজধানী ঢাকার বারিধারার ডিওএইচএসের নিজ বাসা থেকে অধ্যাপক এম এ মান্নানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মোট ২২টি মামলায় ১৩ মাস কারাগারে থাকার পর গত ২ মার্চ তিনি জামিনে কারামুক্ত হন।
গত বছরের ১৯ আগস্ট অধ্যাপক এম এ মান্নানকে বরখাস্তের আদেশ দেওয়া হয়। এরপর তাঁর অবর্তমানে একই বছরের ৮ মার্চ থেকে প্যানেল মেয়র আসাদুর রহমান কিরণ গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ভারপ্রাপ্ত মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন শুরু করেন।