‘গণতন্ত্রকে অর্থবহ করতে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ অপরিহার্য’
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় শহীদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করে বলেছেন, ‘গণতন্ত্রকে অর্থবহ করতে হলে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ ও সহমর্মিতার পাশাপাশি পরমতসহিষ্ণুতা অপরিহার্য।’
সংবাদ সংস্থা বাসস জানিয়েছে, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা দিবস উপলক্ষে এ বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আমার দৃঢ় বিশ্বাস দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রাকে বেগবান করতে সকল রাজনৈতিক দল নিজ নিজ অবস্থান থেকে অবদান রাখবে।’
রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে গণতন্ত্রকামী জনগণ একটি আত্মমর্যাদাশীল ও সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে এগিয়ে আসবেন।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রা ও বাঙালি জাতির ইতিহাসে ২১ আগস্ট একটি কালো দিবস। ২০০৪ সালের এদিন বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জনসভায় বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলায় শহিদ হন বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভানেত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নেতাকর্মী।’ তিনি শোকাবহ ঐ মর্মান্তিক ঘটনায় সকল শহিদের স্মৃতির প্রতি আমি গভীর শ্রদ্ধা জানান।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘আমাদের মহান স্বাধীনতাযুদ্ধসহ মাতৃভাষা ও স্বাধিকার আন্দোলনের সাথে মিশে আছে লাখো শহীদের আত্মত্যাগ। এ দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রার পথও মসৃণ নয়। নানা চড়াই-উতরাইয়ের মধ্য দিয়ে গণতন্ত্র এগিয়ে চলেছে। অগণতান্ত্রিক শক্তি বারবার গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করেছে।’
রাষ্ট্রপতি আরো বলেন, ‘স্বাধীন বাংলাদেশে গণতন্ত্রের ওপর প্রথম আঘাত আসে ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। এদিন স্বাধীনতাবিরোধী ঘাতকচক্রের হাতে অকালে জীবন দিতে হয়েছে স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের। এরপরও ঘাতকচক্র থেমে থাকেনি। তাঁরা বঙ্গবন্ধুতনয়া বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার উদ্দেশ্যে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট পরিকল্পিতভাবে বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জনসভা চলাকালীন ইতিহাসের বর্বরতম গ্রেনেড হামলা চালায়।’
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘তাদের লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে নেতৃত্বহীন করে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে রুখে দেওয়া এবং দেশে জঙ্গিবাদ প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ তা হতে দেয়নি এবং ভবিষ্যতেও হতে দেবে না। আল্লাহর অশেষ রহমতে সেদিন জননেত্রী শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে গেলেও প্রাণ হারান দলের ২৪ জন নেতাকর্মী। আহত হন অর্ধ-সহস্রাধিক নেতাকর্মী। এ হামলায় বেঁচে থাকা অনেকে আজও পঙ্গুত্ব বরণ করে দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন।’
রাষ্ট্রপতি ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় শহীদদের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।