প্রাণভিক্ষার জন্য মীর কাসেমকে ৭ দিন সময়
মীর কাসেম আলীর ফাঁসির রায় যৌক্তিক সময়ের মধ্যে কার্যকর করা হবে, তবে সে সময় সর্বোচ্চ সাত দিন বলে জানিয়েছেন কারা মহাপরিদর্শক (আইজি প্রিজন) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন। আজ বুধবার কারা অধিদপ্তরে আইজি প্রিজন এ কথা জানান।
সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন বলেন, ‘প্রাণভিক্ষার ব্যাপারে তিনি (মীর কাসেম আলী) এখনো কোনো মতামত জানাননি। তিনি আরো কিছু সময় দেওয়ার জন্য বলেছেন। আমরা তো মানবতাবাদী। সুতরাং মানবিক মূল্যবোধ আমাদের আছে। তাকে একটা রিজনেবল সময় দেওয়া হয়েছে। আমরা তাঁকে সর্বোচ্চ সাত দিন সময় দিয়েছি।’
এদিকে রাতে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারের নিরাপত্তা, আলোক ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে আইজি প্রিজন বলেন, ‘আগামীকাল পুনরায় প্রাণভিক্ষার বিষয়ে তাঁর (মীর কাসেম আলী) মতামত জানতে চাওয়া হবে। এ বিষয়ে তিনি কী বলেন তারপর আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে কারা মহাপরিদর্শক আরো বলেন, ‘মীর কাসেম আলীর বিচার আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে হয়েছে। এ আইনে প্রাণ ভিক্ষার বিষয়টি স্পষ্ট করা নেই। অন্যান্য রায়ের বিষয়ে আমরা সর্বোচ্চ সাতদিন সময় দিয়ে থাকি। তবে আমরা আশা করি তার আগেই উত্তর পাওয়া যাবে।’
এ সময় আইজি প্রিজনের সঙ্গে কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারের জেল সুপার ও জেলাররা উপস্থিত ছিলেন।
২০১৪ সালের ২ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ে মীর কাসেম আলীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। গত ৮ মার্চ আপিলের রায়েও সেই সাজা বহাল থাকে। উচ্চ আদালতে ওই রায়ের রিভিউ আবেদন করলে গতকাল মঙ্গলবার তাঁর আবেদন খারিজ হয়ে যায়।
এখন রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইতে পারবেন একাত্তরের আলবদর নেতা মীর কাসেম আলী। প্রাণভিক্ষা না চাইলে বা প্রাণভিক্ষার আর্জি নাকচ হয়ে গেলে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুসারে কারা কর্তৃপক্ষ তাঁর ফাঁসির দণ্ড কার্যকরের ব্যবস্থা নেবে। তার আগে আসামির সঙ্গে পরিবারের সদস্যরা সাক্ষাতের সুযোগ পাবেন।
মীর কাসেম আলী ২০১২ সালের ১৭ জুন গ্রেপ্তারের পর থেকে কাশিমপুর কারাগারেই ছিলেন। ২০১৪ সালের আগে তিনি এ কারাগারে হাজতবাসকালে ডিভিশনপ্রাপ্ত বন্দির মর্যাদায় ছিলেন। পরে ২০১৪ সালের নভেম্বরে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হলে তাঁকে ফাঁসির সেলে পাঠানো হয়। তবে এর আগে ওই বছরই ২০ জুন তাঁকে কাশিমপুর কারাগার থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করা হয়েছিল। পরে ২৬ জুলাই আবার তাঁকে কাশিমপুর কারাগারে ফেরত পাঠানো হয়।
একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ২০১২ সালের ১৭ জুন মতিঝিলে নয়া দিগন্ত কার্যালয় থেকে গ্রেপ্তার করা হয় মীর কাসেম আলীকে। পরের বছর ৫ সেপ্টেম্বর অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় তাঁর যুদ্ধাপরাধের বিচার।