দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ : শিক্ষামন্ত্রী
শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেছেন, ‘আমাদের দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। এই প্রথম আমরা বিদেশের মাটিতে চাল বিক্রি করেছি। এর পেছনে সবচেয়ে বেশি অবদান বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জ্ঞান অর্জনকারীদের।’
আজ শনিবার দুপুরে ময়মনসিংহে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদিন মিলনায়তনে ‘অ্যাগ্রোনমি অ্যান্ড লাইভলিহুড ভিশন ২০৫০ অ্যান্ড বিয়ন্ড ফর বাংলাদেশ’ শীর্ষক সেমিনারে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন।
নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘হাজার বছর ধরে আমরা স্বাধীন ছিলাম না। পেট ভরে ভাত খেতে পারতাম না। আমাদের নিত্যসঙ্গী ছিল অভাব, অনটন, ক্ষুধা, দরিদ্রতা। আমাদের মানুষের মনে ছিল স্বপ্ন। ক্ষুধা, অভাব, অনটন থেকে মুক্তি লাভ করবে এই আশা নিয়ে তাঁরা বেঁচে ছিলেন। সেই স্বপ্নকে আমরা সুস্পষ্ট রূপ দিয়েছিলাম আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে। তাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের সবাইকে নিয়ে দেশটাকে স্বাধীন করেছেন।’
বাকৃবির সাফল্যের কথা তুলে ধরে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার সার্থকতা সবচেয়ে দৃশ্যমান হয়ে আমাদের সামনে ফুটে উঠেছে এই কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাফল্যের মধ্য দিয়ে। পরিবর্তন করবার লক্ষ্য নিয়ে ২০০৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণকে ম্যান্ডেট দিয়েছেন, আমরা এই দেশকে পরিবর্তন করব। দরিদ্রতা, নিরক্ষরতা ও দুর্নীতির অবসান করে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলব।’
নুরুল ইসলাম নাহিদ আরো বলেন, ‘আগে আমরা বিদেশ থেকে ভিক্ষার ঝুলি নিয়ে আসতাম। আজ আমরা খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। আমরা উদ্বৃত্ত খাদ্য উৎপাদন করছি। কেন এটা সম্ভব হয়েছে? সবচেয়ে বেশি অবদান এই কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের। এখান থেকে যারা জ্ঞান অর্জন করেছেন। বিশেষ করে আজকে যাঁরা সম্মেলন করছেন। আপনারা জ্ঞান সৃষ্টি করে রেখেছেন যেন আমরা খাদ্য অনেক বেশি ফলাতে পারি। তিনগুণ, চারগুণ ফলাতে পারি। সেটা কাজে লাগিয়েই এই সাফল্য অর্জন করা সম্ভব হয়েছে। তাই তার মূলে রয়েছেন আপনারা। যাঁরা এই জ্ঞান অর্জন করেছেন। যার ফলে খাদ্য উৎপাদন করে এখন আমাদের উদ্বৃত্ত থাকে। মাত্র চার, পাঁচ-ছয় বছরের মাথায় আমাদের দেশ এখন খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। আমরা রিলিফ খেয়ে বড় হয়েছি। এই প্রথম আমরা বিদেশের মাটিতে চাল বিক্রি করেছি। ৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল আমরা শ্রীলঙ্কায় বিক্রি করেছি। নেপালে ভূমিকম্পের পর ১০ হাজার মেট্রিক টন খাদ্যশস্যসহ অন্যান্য সামগ্রী রিলিফ দিতে পেরেছি।’
বাংলাদেশ সোসাইটি অব অ্যাগ্রোনমির আয়োজনে দুদিনব্যাপী এই সেমিনারে আরো বক্তব্য দেন প্রধান পৃষ্ঠপোষক বাকৃবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো আলী আকবর, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ড. এম রফিকুল ইসলাম মণ্ডল, জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) বাংলাদেশ প্রতিনিধি ড. মাইক রবসন।
সেমিনারে কার্যপত্র উপস্থাপন করেন অধ্যাপক ড. এ কে এম রুহুল আমীন ও অধ্যাপক ড. মো আবদুল কাদের। এ সময় কৃষি গবেষণায় অবদানের জন্য বাকৃবির অধ্যাপক ড. আবদুর রহমান সরকার এবং বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের ব্জ্ঞিানী নূর ই এলাহীকে সম্মাননা দেওয়া হয়।