সৈয়দ শামসুল হকের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত
সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বুধবার সকাল ১০টা ৫ মিনিটে চ্যানেল আই প্রাঙ্গণে তাঁর জানাজা হয়।
জাতীয় কবিতা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক তারিক সুজাত জানান, জানাজার পর সৈয়দ শামসুল হকের মরদেহ বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে নেওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁর মরদেহ নেওয়া হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে।
শহীদ মিনারে সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে জোহরের নামাজের পর লেখকের দ্বিতীয় জানাজা হবে। এরপর তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দর এলাকা থেকে হেলিকপ্টারে করে তাঁর মরদেহ কুড়িগ্রামে নেওয়া হবে। সেখানে তাঁর দাফন সম্পন্ন হবে।
গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন সৈয়দ হক। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮১ বছর।
ফুসফুসের ক্যানসারের স্টেজ ফোরে আক্রান্ত সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি হন ১ সেপ্টেম্বর। ২৬ সেপ্টেম্বর সোমবার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে ওই হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) স্থানান্তর করা হয়।
গতকাল মঙ্গলবার ভোরে সৈয়দ হককে কৃত্রিম শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য ভেন্টিলেটরের সহায়তায় রাখা হয়। পরে চিকিৎসকদের সব চেষ্টা ব্যর্থ করে বিকেল সাড়ে ৫টায় না-ফেরার দেশে চলে যান তিনি।
ইউনাইটেড হাসপাতালের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাজ্জাদুর রহমান এনটিভি অনলাইনকে জানান, বিকেলে ৫টা ২৬ মিনিটে লেখকের মৃত্যু হয়। তিনি হাসপাতালের ক্যানসার কেয়ার সেন্টারের পরামর্শক ডা. অসীম কুমার সেনগুপ্তের অধীনে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
সৈয়দ শামসুল হকের মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
লন্ডনের রয়াল মার্সডেন হাসপাতালে চার মাস চিকিৎসার পর গত ১ সেপ্টেম্বর সৈয়দ শামসুল হক দেশে ফেরেন। এর আগে গত ১৫ এপ্রিল ফুসফুসের সমস্যা নিয়ে তিনি লন্ডনে যান এবং সেখানে পরীক্ষায় তাঁর ক্যানসার ধরা পড়ে। লন্ডন থেকে ফিরলে তাঁকে ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাঁর চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বাংলা সাহিত্যে অসাধারণ অবদান রাখার জন্য এই কবি ও লেখক ১৯৬৬ সালে বাংলা একাডেমি পুরস্কার, ১৯৮৪ সালে একুশে পদক এবং ২০০০ সালে স্বাধীনতা পদক লাভ করেন।
সৈয়দ শামসুল হকের সাহিত্যিক প্রতিভা কালোত্তীর্ণ। গল্প, প্রবন্ধ, উপন্যাস, কবিতা, নাটক, কাব্যনাট্য, চলচ্চিত্রসহ বাংলা সাহিত্যের বিভিন্ন ক্ষেত্রে তিনি কালজয়ী অবদান রেখেছেন। তাঁর লেখা বেশ কয়েকটি বহুল পরিচিত নাটক বাংলাদেশের মঞ্চনাটকের ইতিহাসে মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হয়।