রাঙামাটিতে ভবনধস, নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৪
রাঙামাটি শহরের সরকারি মহিলা কলেজ সড়কে একটি দোতলা ভবন কাপ্তাই হ্রদে ধসে পড়ে অন্তত চারজন নিহত হয়েছে। এতে ওই ভবনের অন্তত চারটি পরিবারের ১০ জন সদস্য আটকা পড়ে। স্থানীয়রা প্রথমে পাঁচজনকে বের করে আনে। পরে ফায়ার সার্ভিস আসার পর একে একে চারজনকে মৃত উদ্ধার করে। ভবনটিতে এখনো এক শিশু আটকে আছে বলে দাবি করছে তার পরিবার।
উদ্ধার হওয়াদের রাঙামাটি সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসকরা তাদের মৃত ঘোষণা করেন। নিহতরা হলেন জাহিদ (৪২), তাঁর মেয়ে পিংকি (১৩), সামাদুল (৭) ও হাবিবা (২২)। হাবিবা একটি বাসার গৃহশিক্ষিকা।
আজ মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে মহিলা কলেজ সড়কের হ্রদের পাড়ে অবস্থিত নঈমউদ্দিন টিটু নামের এক ঠিকাদারের মালিকানাধীন দোতলা ভবনটি দেবে যেতে শুরু করে। মাত্র ১০ মিনিট সময়ের মধ্যে ভবনটির নিচতলা পুরো দেবে যায়। এ সময় ভবনের দুটি ফ্লোরে অন্তত চারটি পরিবার আটকা পড়ে। পাশের একটি নারকেল গাছের কারণে ভবনের দোতলা তলিয়ে যেতে বেশ সময় নিচ্ছিল। এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আটকে পড়াদের উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছিলেন সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা। তবে অন্ধকার হওয়ায় উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছিল।
ধসে পড়া ভবনের বাসিন্দা ও উদ্ধার হওয়া এক নারী জানিয়েছেন, বিকেল থেকেই ভবনটির সড়কের পাশের মাটি সরছিল এবং ভবনটি ধীরে ধীরে হেলে পড়তে শুরু করে।
কিন্তু হঠাৎ বিকট শব্দে ভবনটি মূল ভূমি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে এবং কাপ্তাই হ্রদের পানিতে তলিয়ে যেতে শুরু করে।
কাপ্তাই হ্রদের পানি বৃদ্ধির কারণে এবং হ্রদের পাড়ের জায়গা দখল করে অবৈধভাবে নির্মিত অসংখ্য স্থাপনার কারণে এসব ভবন সব সময়ই ঝুঁকিপূর্ণ। কিন্তু কখনই রাজনৈতিক কারণে এসব স্থাপনার বিরুদ্ধে নেওয়া হয় না কোনো পদক্ষেপ। যে ভবনটি ধসে পড়েছে, সেই ভবনটির প্রায় সবগুলো ভিতই কাপ্তাই হ্রদের পানির মধ্যে অবস্থিত।
ঘটনাস্থলে রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মানজারুল মান্নান, সেনাবাহিনীর জোন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কর্নেল মালিক শামস উদ্দীন মো. মঈন উপস্থিত থেকে উদ্ধার প্রক্রিয়া তদারকি করেছেন। রাতে জেনারেটর চালিয়ে উদ্ধার অভিযানে অংশ নেন ফায়ার সার্ভিস, নৌবাহিনী ও সেনাবাহিনী সদস্যরা। তাঁদের সঙ্গে স্থানীয়রাও অংশ নেন।