সীমানা জটিলতায় পেছাতে পারে কুমিল্লা সিটির নির্বাচন
প্রস্তুতি নিলেও কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের নির্বাচন আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে নাও হতে পারে। এর কারণ হিসেবে সীমানা সংক্রান্ত জটিলতার কথা বলছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
ইসি সূত্র জানায়, গত ৫ অক্টোবর হাইকোর্টের একটি আদেশে আগামী তিন মাসের মধ্যে মাস্টারপ্ল্যান বাস্তবায়ন করে কুমিল্লা সিটি করপোরেশনে নির্বাচন করতে বলা হয়।
সূত্র জানায়, কুমিল্লা পৌরসভা ও কুমিল্লা সদর পৌরসভা একীভূত করে ৫৩ দশমিক ০৪ বর্গকিলোমিটার আয়তনে ২৭টি ওয়ার্ড নিয়ে সরকার ১০ জুলাই ২০১১ তারিখে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন প্রতিষ্ঠা করে। পরে সিটি করপোরেশন ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের সহায়তায় এই সিটির আয়তন ১৫০ বর্গকিলোমিটার করার প্রস্তাব হয়। সেই অনুযায়ী এ সিটি এলাকা সম্প্রসারণের লক্ষ্যে উল্লিখিত মৌজাগুলো অন্তর্ভুক্তির নির্দশনা চেয়ে কাজী মাহাবুবুর রহমান প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ ছয়জনকে প্রতিপক্ষ করে হাইকোর্ট বিভাগে রিট পিটিশন দায়ের করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত গত ৫ অক্টোবর রুল জারি করেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘সিটি করপোরেশন স্থানীয় সরকারের নির্বাচন। তাই কোনো সিটি করপোরেশনে সীমানা নিয়ে কোনো জটিলতা থাকলে তা ঠিক করবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। এটা কমিশনের বিষয় নয়। আমরা আইন অনুযায়ী নির্বাচন করব।’
তবে এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইসি কর্মকর্তারা জানান, হাইকোর্ট যদিও কুমিল্লা সিটির নির্বাচন বন্ধ করতে বলেননি। কিন্তু আদেশে তিন মাসের মধ্যে মাস্টারপ্লান বাস্তবায়ন করে নির্বাচন করতে বলা হয়েছে। সে হিসেবে আগামী ৫ জানুয়ারির মধ্যে সীমানা ঠিক করতে হবে। সেই হিসেবে ধারণা করা হচ্ছে এ বছর কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন করা সম্ভব নাও হতে পারে। তবে সব কিছু নির্ভর করবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের ওপর।
এর আগে কুমিল্লা ও নারায়ণগঞ্জ সিটিতে একই সঙ্গে নির্বাচন করার কথা জানায় কমিশন।
কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০১২ সালের ৫ জানুয়ারি। আর এ সিটিতে প্রথম সভা হয় একই বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি। এ সিটির মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখ ২০১৭ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি। পরবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠানের সময়সীমা ১২ আগস্ট ২০১৬ থেকে ২০১৭ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি। এ সিটিতে সাধারণ ওয়ার্ড রয়েছে ২৭টি এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ড রয়েছে নয়টি। মোট ভোটার সংখ্যা এক লাখ ৬৯ হাজার ২৭৩ জন (আগের নির্বাচনের হিসাব অনুযায়ী)। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার রয়েছে ৮৩ হাজার ১৯৯ জন এবং মহিলা ভোটার রয়েছে ৮৬ হাজার ৭৪ জন।
স্থানীয় সরকারের সিটি করপোরেশন আইন অনুযায়ী, সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পর প্রথম সভা থেকে পরবর্তী পাঁচ বছর তার মেয়াদ হয়। মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্ববর্তী ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।