কোন কর্তৃত্ববলে সাঁওতাল উচ্ছেদ, জানতে আইনি নোটিশ
কোন কর্তৃত্ববলে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে সাঁওতালদের উচ্ছেদ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে তা জানতে চেয়ে প্রশাসনের কাছে আইনি নোটিস পাঠানো হয়েছে।
একইসঙ্গে উচ্ছেদের সময় তাদের ওপর হামলা, লুটপাট ও হত্যাকাণ্ডে দোষীদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, নোটিসে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।
আহত ডিজেন টুডুর স্ত্রী অলিভিয়া হ্যামভ্রম ও গণেশ মুরমোর স্ত্রী রুমিলা কিসকুর পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া আজ মঙ্গলবার দুপুরের রেজিস্ট্রি ডাকযোগে এ নোটিশ পাঠান।
আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ নোটিশের জবাব না দিলে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার কথাও সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে।
নোটিশে স্বরাষ্ট্রসচিব, শিল্পসচিব, পুলিশ মহাপরির্শক, গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক, রংপুর রেঞ্জের পুলিশের উপমহাপরিদর্শক, গাইবান্ধার পুলিশ সুপার, গোবিন্দগঞ্জের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও মহিমগঞ্জের চিনিকলের ব্যবস্থাপনকে বিবাদী করা হয়েছে।
গত ৬ নভেম্বর গোবিন্দগঞ্জের সাহেবগঞ্জ আখ খামারের জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে সেখানে বসবাসরত প্রায় আড়াই হাজার সাঁওতাল বসতি পুড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। স্থানীয় বাঙালি-পুলিশ ও সাঁওতালদের মধ্যে সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন সাঁওতাল আহত হন। মামলা করা হয় শতাধিক সাঁওতালের নামে। এ ঘটনায় আহত তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তার হওয়া তিন সাঁওতালকে হাসপাতালে হাতকড়া লাগিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে এমন খবরে হাইকোর্টে একটি রিট করেন আইনজীবী জ্যোর্তিময় বড়ুয়া। এ রিটের শুনানি নিয়ে গতকাল সোমবার হাসপাতালে চিকিৎধীন সাঁওতালদের হাতকড়া খুলে দিতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এই নির্দেশ বাস্তবায়ন করে ১৬ নভেম্বরের মধ্যে তা প্রতিবেদন আকারে হাইকোর্টে দাখিল করতে বলা হয়েছে ঢাকার পুলিশ কমিশনার, রংপুরের ডিআইজি ও গাইবান্ধার পুলিশ সুপারকে।
এদিকে আজ দুপুরে রংপুর মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন তিন সাঁওতালের মধ্যে ডিজেন টুডুর চোখের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। অন্য দুজনকে গাইবান্ধার বিচারিক হাকিমের আদালত কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
দুপুরেই আদালতে হাজিরের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা শেষ না করেই গাইবান্ধায় নিয়ে যায় পুলিশ।