কুড়িগ্রামে ভুয়া সনদে প্রধান শিক্ষক নিয়োগের অভিযোগ
এসএসসি ও এইচএসসিতে তৃতীয় বিভাগ, বিএসসি পরীক্ষায় দুবার অংশ নিয়ে বিশেষ বিবেচনায় পাস আর বিএড পাসের ভুয়া সনদ—তার পরও তিনি প্রধান শিক্ষক। সর্বশেষ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নীতিমালা অনুযায়ী শিক্ষাগত সনদে একাধিক তৃতীয় বিভাগ অধিকারী কোনো শিক্ষককে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ দেওয়া যাবে না। এই নীতিমালার তোয়াক্কা না করে কুড়িগ্রামের রৌমারী বকবান্দা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে টাকার বিনিময়ে আবদুর রহমান নামের এক ব্যক্তিকে প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসী বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে।
প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর লিখিত অভিযোগে জানা গেছে, আবদুর রহমান আগে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে ছিলেন। গোপনে অখ্যাত পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ব্যাপক অনিয়মের মাধ্যমে তিনি নিজেই নিয়োগ নিয়েছেন।
প্রধান শিক্ষক পদে আবেদনকারী সহিদুল ইসলাম, ইউসুফ আলী, শাহজাহান আলী ও গোলাম মোস্তফা অভিযোগ করেছেন, নিয়োগ পরীক্ষা শুরুর আগেই প্রশ্নপত্র ফাঁস করে দেওয়া হয় আবদুর রহমানকে।
শহীদুল ইসলাম নামের এক শিক্ষক বলেন, আবদুর রহমানের এসএসসি ও এইচএসসি তৃতীয় বিভাগ আর বিএসসি দুবার ফেল করে বিশেষ বিবেচনায় পাস করেছেন। বিএড কোর্সে লেখাপড়া না করে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে পাসের ভুয়া সনদ নিয়েছেন। স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতিকে আবদুর রহমানের বিষয়ে অবহিত করার পরও কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
প্রতিষ্ঠানের আজীবন দাতা সদস্য আবদুল বারী সরকার অভিযোগ করেন, প্রধান শিক্ষক পদে অযোগ্য ব্যক্তিকে নিয়োগ দেওয়ার ফলে শিক্ষক ও শিক্ষার্থী বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে।
স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি স্থানীয় সংসদ সদস্য রুহুল আমিন বলেন, ‘নিয়োগের সময় আমি উপস্থিত ছিলাম না। পরে শুনেছি, যাকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তাঁর শিক্ষাগত সনদ ভুয়া। এলাকাবাসী ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে কমিটির সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নিয়োগ পাওয়া প্রধান শিক্ষক আবদুর রহমান বলেন, ‘আমার শিক্ষাগত যোগ্যতা তৃতীয় বিভাগ থাকলে কী হবে? অনেক প্রধান শিক্ষকেরও তো তৃতীয় বিভাগ রয়েছে। আর বিএড কোর্সে পরীক্ষা দিয়ে পাস করেছি। সনদ ভুয়া, এটা মিথ্যা। তা ছাড়া কমিটির লোকজনের পেছনে আমার ১৭ লাখ টাকা খরচ হয়েছে।’
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রেজাউল কবীর জানান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী তৃতীয় বিভাগধারী কেউ প্রধান শিক্ষক হতে পারবে না। তিনি আরো বলেন, ‘শিক্ষক নিয়োগ প্রদান করে পরিচালনা কমিটি, আমি নিরুপায়। যদি ওই শিক্ষকের তৃতীয় বিভাগ বা ভুয়া সনদ হয়, তাহলে তাঁর বিল আটকে যাবে।’