গোবিন্দগঞ্জে পুলিশ আগুন দিয়েছে কি না, তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের
গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের সাঁওতাল পল্লীতে আগুন দেওয়ার ঘটনায় পুলিশ জড়িত কি না, তা তদন্ত করে দেখতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে গাইবান্ধার বিচারিক হাকিমকে বিষয়টি তদন্ত করে হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
সাঁওতাল পল্লীতে আগুন দেওয়ার বিভিন্ন ছবি ও ভিডিও ফুটেজ সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার পর সাঁওতালদের ঘটনা নিয়ে রিটকারী আইনজীবীরা আজ বুধবার আদালতে বিষয়টি উত্থাপন করেন। পরে শুনানি শেষে বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
একইসঙ্গে সাঁওতালদের পক্ষে স্বপন মুরমু ও টমাস হেমব্রমের করা মামলা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) দিয়ে তদন্তের নির্দেশও দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আজ রিটকারীর আইনজীবীদের পক্ষে ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া এবং রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোতাহার হোসেন সাজু শুনানিতে অংশ নেন।
গত ৬ নভেম্বর গাইবান্ধার সাহেবগঞ্জ আখ খামারের জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে সেখানে বসবাসরত প্রায় আড়াই হাজার সাঁওতাল বসতি পুড়িয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা। স্থানীয় বাঙালি-পুলিশ ও সাঁওতালদের মধ্যে সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন সাঁওতাল আহত হন। এ সময় নিহত হন তিন সাঁওতাল। এ ছাড়া এ ঘটনায় মামলা করা হয় শতাধিক সাঁওতালের নামে। এতে আহত তিন সাঁওতালকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে সাঁওতালদের ওপর হামলার ঘটনায়ও আলাদা মামলা করা হয়।
এদিকে গত সোমবার মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক টেলিভিশন চ্যানেল আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে দেখা যায়, সাঁওতালদের এলাকায় প্রবেশ করেছে পুলিশ সদস্যদের একটি দল। আশপাশে আরো অনেক গুলির আওয়াজ পাওয়া যায়। তখন দলটি একটি বাড়ির পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় সেই বাড়িটির চালা থেকে কিছু খড় খুলে নিয়ে তাতে আগুন ধরানোর চেষ্টা করেন এক পুলিশ সদস্য। তাঁকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন ওই দলে থাকা গোলাপি পোশাক পরিহিত আরেক ব্যক্তি। পরে শার্ট পরিহিত আরেক ব্যক্তি এসে তাঁদের সহযোগিতা করেন। কিছুক্ষণ পরই দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে বাড়িটি। আর পাশে দাঁড়িয়ে তা দেখতে থাকেন অন্য পুলিশ সদস্যরা।
এই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমে ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়ে। এতে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। এই ভিডিও ও ছবি আদালতের নজরে আনা হলে বিষয়টি তদন্তের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।