কাজী নজরুল ইসলাম বাংলা সাহিত্যের উজ্জ্বল নক্ষত্র : রাষ্ট্রপতি
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেছেন, সাম্য ও মানবতার কবি কাজী নজরুল ইসলাম বাংলাসাহিত্য ও সংস্কৃতির ইতিহাসে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। জাতীয় কবি কাজী নজুরুল ইসলামের ১২৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন।
আজ বুধবার (২৪ মে) এক সরকারি তথ্য বিবরণীতে এসব কথা বলা হয়েছে।
জাতীয় কবির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বাণীতে রাষ্ট্রপতি বলেন, “সাম্য ও মানবতার কবি কাজী নজরুল ইসলাম বাংলাসাহিত্য ও সংস্কৃতির ইতিহাসে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। তাঁর কালজয়ী লেখায় ঋদ্ধ হয়েছে বাংলাভাষা ও সাহিত্য। নজরুল ছিলেন একাধারে কবি, সংগীতজ্ঞ, কথাসাহিত্যিক, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক। কবির লেখনী শোষিত-নির্যাতিত ও বঞ্চিতদের অধিকার আদায়ে আমাদের সোচ্চার করে, শিক্ষা দেয় অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে। ব্রিটিশ উপনিবেশিক শাসন-শোষণের অবসানে তিনি অবতীর্ণ হয়েছিলেন তূর্যবাদকের ভূমিকায়। শতবর্ষ পূর্বে উপমহাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলন ও ব্রিটিশ শাসনবিরোধী সংগ্রাম যখন জোরদার হচ্ছিল, নজরুল তখন অসহযোগ ও খেলাফত আন্দোলনের পটভূমিতে রচনা করেন ‘অগ্নি-বীণা’ কাব্যগ্রন্থ।”
রাষ্ট্রপতি বলেন, “ভারতীয় উপমহাদেশের দুর্যোগঘন সময়ে নজরুলের ‘অগ্নি-বীণা’ গ্রন্থের কবিতাসমূহ যুগ-মানসকে ভীষণভাবে প্রভাবিত করেছিল। একদিকে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গাকে প্রশমিত, অন্যদিকে জনমানসকে উজ্জীবিত করার জন্য লিখলেন প্রলয়োল্লাস, বিদ্রোহী, রক্তাম্বরধারিণীমা, আগমনী, ধূমকেতু, কামালপাশা, আনোয়ার, রণভেরী, শাত-ইল-আরব, খেয়াপারের তরণী, কোরবানী, মহররম কবিতা। কবিতাগুলোতে তিনি হিন্দু-মুসলিম ঐতিহ্য ও ইতিহাসকে সমানভাবে ধারণ করেছেন।”
রাষ্ট্রপতি বলেন, “ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী শাসকের কঠিন নিগূঢ় কবির বিদ্রোহী কণ্ঠস্বর রুদ্ধ করতে পারেনি। নিজের ওপর ছিল তাঁর গভীর আত্মবিশ্বাস এবং সত্যের প্রতি তাঁর ছিল অবিচল আস্থা। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান এবং মহান মুক্তিযুদ্ধসহ বাঙালির প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে নজরুলের কবিতা ও গান। আমি আশা করি, নতুন প্রজন্ম নজরুল-চর্চার মাধ্যমে নিজেদের সমৃদ্ধ করতে সক্ষম হবে এবং দেশপ্রেম, সততা ও নিষ্ঠা দিয়ে সুখী-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে আত্মনিয়োগ করবে। আমি সাম্য ও মানবতার চিরঞ্জীব কবি কাজী নজরুল ইসলামের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি।”