‘বিয়ের চাপ দেওয়ায়’ অন্তঃসত্ত্বা বিউটিকে হত্যা, গ্রেপ্তার ৪
সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরে বিউটি খাতুন হত্যার রহস্য প্রায় পাঁচ বছর পরে উদঘাটন করেছে পিবিআই। অন্তঃসত্ত্বা বিউটি বিয়ের চাপ দেওয়ায় তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার মামলায় চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন।
আজ সোমবার (২৭ মে) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সিরাজগঞ্জ পিবিআই কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান সিরাজগঞ্জ পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার (এসপি) রেজাউল করিম।
গ্রেপ্তার আসামিরা হলেন—সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানার ব্রাহ্মণ গ্রামের মোমিন (৫০), আনু বেগম (৪০) ও খোকশাবাড়ি গ্রামের স্বপন ব্যাপারি (৩৭)।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তেব্যে পুলিশ সুপার বলেন, ‘সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানার ব্রাহ্মণ গ্রামের সাচ্চু মিয়ার মেয়ে বিউটি খাতুনের বিয়ে হয় ২০১৪ সালে। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে পারিবারিকভাবে মিমাংসার মাধ্যমে বিউটি তার স্বামীকে তালাক দেন। এরপর থেকে বিউটি তার বাবার বাড়িতে থাকতেন। বাড়িতে থাকার সময়ে বিউটি খাতুনকে তার প্রতিবেশী ওমর ফারুক বিয়ের প্রস্তাব দিতেন। এছাড়া স্বপন নামের আরেকজন বিউটির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করতেন। একপর্যায়ে স্বপনের সঙ্গে প্রেম থেকে শারীরিক সম্পর্ক তৈরি হয় বিউটির। দুই মাসের সম্পর্ক চলাকালে বিউটি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে গেলে স্বপনকে বিয়ের জন্য চাপ দেন। কিন্তু স্বপন বিবাহিত হওয়ায় বিউটিকে বিয়ে করতে অস্বীকার করেন। পরে স্বপন প্রতিবেশী ওমর ফারুককে ডেকে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেন। পরে তারা বিউটির ছোট খালাকে টাকা দেওয়ার কথা বলে বিউটিকে হত্যার প্রস্তাব দেন। ২০১৮ সালের ১৩ মে রাতে স্বপন লোকজন নিয়ে বিউটির বাড়ির পাশে মিলিত হয়। তারা বিউটির ঘরে প্রবেশ করে ঘুমন্ত বিউটির হাত, পা ও মাথা চেপে ধরে বালিশ চাপা দিয়ে বিউটিকে হত্যা করে কৌশলে পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় বিউটির বাবা বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। বিউটির বাবার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তদন্ত চলার সময় পিবিআই ২০২১ সালে ১৬ ফেব্রুয়ারি এনায়েতপুর থানার ব্রাহ্মণ গ্রামের ওমর ফারুককে (২৮) গ্রেপ্তার করে। এরপর গত ২৩ মে গ্রেপ্তার করা হয় স্বপন ব্যাপারি, মোমিন ও আনু বেগমকে।’