নির্যাতন যত বাড়বে আন্দোলন তত তীব্র হবে : নজরুল ইসলাম খান
বিএনপিসহ বিরোধী নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন যত বাড়বে, আন্দোলনের গতি তত তীব্র হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
ঢাকা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এবং নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট নিপুণ রায় চৌধুরীর ওপর আওয়ামী সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে আজ বুধবার (৩১ মে) অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে নজরুল ইসলাম এসব কথা বলেন। নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের উদ্যোগে সংগঠনের আহ্বায়ক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমানের সভাপতিত্বে এই মানববন্ধন হয়।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, বহু বছর ধরেই দেখছি যারা গণতন্ত্রের কথা বলে, এই অগণতান্ত্রিক সরকার তাদের উপর নিপীড়ন চালায়। তাদের ওপর আক্রমণ করে আহত নিহত করে, গুম-খুন করে, তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয় গ্রেপ্তার করে হয়রানি করে। এসব অপরাধ করার পরেও এই সরকার দাবি করে তাদের হাতেই নাকি গণতন্ত্র নিরাপদ। আসলে এই সরকার ফ্যাসিবাদী সরকার। গণতন্ত্রকে বাঁচাতে হলে এই ফ্যাসিবাদী ও স্বৈরশাসক সরকারের পতন ঘটাতে হবে। গণতান্ত্রিক আন্দোলনে রাজপথের লড়াকু সৈনিক আমাদের নিপুণ রায়ের ওপর ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ হামলা করে গুরুতর আহত করেছে। নিপুণ সাহস হারায়নি। অত্যাচার যত বাড়বে, অন্যায়ের প্রতিবাদ তত তীব্র হবে। আমাদের এই ক্ষোভ পুষে রাখতে হবে। আগামীতে যে বৃহত্তর আন্দোলন হবে সেখানে এই ক্ষোভ-ব্যথা বুকে নিয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।
অনুষ্ঠান বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, আন্দোলনের জন্য স্বস্তিদায়ক স্থানের প্রয়োজন হয় না, অনুকূল পরিবেশের প্রয়োজন হয় না, যে কোনো পরিবেশে আন্দোলন করা যায়। আমাদের নিপুণ রায় তা দেখিয়েছে।
সরকারের কঠোর সমালোচনা করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, নির্বাচনের আগে এই সরকার অনেক তামাশা দেখাবে। তারই অংশ হিসেবে নিপুণের ওপরে আঘাত করা হয়েছে। কাপুরুষ না হলে একজন নারীকে এভাবে আঘাত করে কেউ। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী ও দুর্নীতিবাজদের আদালতে যেতে হয় না। কিন্তু বিএনপির লাখ লাখ নেতাকর্মীকে প্রতিদিন আদালতের বারান্দায় যেতে হয়। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও দেশের স্বনামধন্য চিকিৎসক ডা. জোবায়দা রহমানের মিথ্যা মামলার সাক্ষীকে আদালতে নেওয়া হয়। এটাও নির্বাচনের আগে সরকারের তামাশা।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, এই দেশে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো নির্বাচন আর হবে না। নির্বাচন হবে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে। সেই নির্বাচনের যাতে বিরোধী দলের জনপ্রিয় নেতারা অংশগ্রহণ করতে না পারে সেজন্য মিথ্যা ভিত্তিহীন মামলায় সাজা দিয়ে নির্বাচনের বাইরে রাখার নতুন কৌশল নিয়েছে। আমাদের স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান ও তার স্ত্রীকে সাজা দেওয়া হয়েছে।
ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ১৯৭০ এর নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের বড় বড় নেতারা কেউ বাইরে ছিলেন না। কিন্তু সেই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিজয় লাভ করেছিল। স্বৈরাচার এরশাদ বিএনপির অনেক নেতাকে বাগিয়ে নিয়েছিলেন, যার কারণে ভালো প্রার্থী পাওয়া যাচ্ছিল না। তারপরও বিএনপি ’৯১ সালের নির্বাচনে জয় লাভ করেছিল। সরকারকে বলব বিএনপির জনপ্রিয় নেতাদের সাজা দিয়ে নির্বাচনের বাইরে রাখার কৌশল ভুল। বরং এই কৌশলের কারণে আওয়ামী লীগ আরো জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। এমনিতেই জনপ্রিয়তার নাই, এসব ভুল কৌশলের কারণে আওয়ামী লীগ নিঃশেষ হয়ে যাবে।
নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের সদস্য রবিউল ইসলাম রবির পরিচালনায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির উপদেষ্টা বিজন কান্তি সরকার, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক, সহপ্রচার সম্পাদক আমিরুল ইসলাম খান আলিম, জলবায়ু বিষয়কসহ সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, কেরাণীগঞ্জ দক্ষিণ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোজাদ্দেদ আলী বাবু প্রমুখ।