বাংলাদেশ-ভারত সেনাবাহিনীর সম্পর্ক ঐতিহাসিক : মনোজ পাণ্ডে
ভারতের সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল মনোজ পাণ্ডে বলেছেন, বাংলাদেশ ও ভারতের সেনাবাহিনীর মধ্যে ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। প্রশিক্ষণ, অনুশীলন ও যোগাযোগ–এই তিন বিষয় সামনে রেখে এগিয়ে যাচ্ছে দুই দেশের সেনাবাহিনী। এছাড়া উভয় দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সঠিক পথে এবং অত্যন্ত ভালো অবস্থাতে রয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার (৬ জুন) সকালে চট্টগ্রামে বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমির ৮৪তম দীর্ঘমেয়াদি কোর্সের প্রশিক্ষণ সমাপনী রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজে অংশগ্রহণ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন ভারতের সেনাপ্রধান।
জেনারেল মনোজ পাণ্ডে বলেন, ‘বর্তমানে যুদ্ধক্ষেত্রে নানান ধরনের প্রযুক্তি যুক্ত হওয়ায় সেনা সদস্যদের আগের চেয়ে আরও কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হয়। সেজন্য প্রশিক্ষণকেও আধুনিকায়ন করা হচ্ছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীও সেই ধারা অব্যাহত রেখেছে।’
ভারতের সেনাবাহিনী প্রধান বলেন, ‘যুদ্ধের ধরন খুব দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে। প্রযুক্তির দ্রুত উন্নতি এবং যুদ্ধাস্ত্রের নানান পরিবর্তন যুদ্ধক্ষেত্রকে আরও জটিল করে তুলছে। আপনারা এই চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে। এই পরিস্থিতিতে ভবিষ্যৎ যুদ্ধক্ষেত্রে সফল হতে প্রযুক্তিগত জ্ঞান, গভীর চিন্তা, মানসিক দৃঢ়তা এবং দ্রুত সাড়া দেওয়ার সক্ষমতা অর্জন করতে হবে।’
মনোজ পাণ্ডে বলেন, ‘আমাদের দীপক্ষীয় সম্পর্ক আমাদের দুই জাতির মধ্যে সব ধরনের যোগাযোগকেই প্রতিফলিত করে। এটি সঠিক পথেই রয়েছে এবং অত্যন্ত ভালো অবস্থাতে আছে। সামরিক যোগাযোগও এই দ্বিপক্ষীয় যোগাযোগের অংশ। এই প্রেক্ষাপটে আমি সামরিক দৃষ্টিকোণ থেকে বলতে চাই–আমরা তিনটি বিষয়কে সামনে রেখে এগিয়ে যাচ্ছি। এর মধ্যে রয়েছে প্রশিক্ষণ, যৌথ অনুশীলন ও সাংস্কৃতিক যোগাযোগ।’
এদিন সকাল ৯টায় বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমির প্যারেড গ্রাউন্ডে পৌঁছেন ভারতীয় সেনাপ্রধান। শুরুতেই নবীন ক্যাডেটদের অভিবাদন গ্রহণ করে কুচকাওয়াজ পরিদর্শন করেন তিনি। তারপর পুরস্কারপ্রাপ্ত ক্যাডেটদের হাতে স্মারক তুলে দেন। এবার সব বিষয়ে শ্রেষ্ঠ কৃতিত্বের জন্য সোর্ড অব অনার অর্জন করেন ব্যাটলিয়ন সিনিয়র আন্ডার অফিসার শেখ সাব্বির আহমেদ। এছাড়া সেনাবাহিনী প্রধান স্বর্ণপদক অর্জন করেন কোম্পানি সার্জেন্ট মেজর তানভীর রহমান তপু। বিদেশি ক্যাডেটদের মধ্যে বাংলাদেশ-ভারত ফ্রেন্ডশিপ ট্রফি পান তানজানিয়ার অফিসার ক্যাডেট এমারটন জন কম্বো।
৮৪তম বিএমএ দীর্ঘমেয়াদি কোর্সে ১৪৬ জন বাংলাদেশি (১২৩ জন পুরুষ ও ২৩ জন নারী) এবং দুজন বিদেশিসহ (একজন দক্ষিণ সুদানের এবং একজন তানজানিয়ার) সর্বমোট ১৪৮ জন অফিসার ক্যাডেট কমিশন লাভ করেন। বিদেশি নবীন অফিসাররা স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের পর নিজ নিজ দেশের সেনাবাহিনীতে যোগদান করবেন। এ সময় সেনাবাহিনীর জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) আর্মি ট্রেনিং অ্যান্ড ডকট্রিন কমান্ড; কমান্ড্যান্ট বিএমএ এবং জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) ২৪ পদাতিক ডিভিশন ও এরিয়া কমান্ডার চট্টগ্রাম উপস্থিত ছিলেন।