রাজনীতি করতে খালেদা জিয়াকে আগে বাকি সাজা ভোগ করতে হবে : আইনমন্ত্রী
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। অসুস্থতাজনিত কারণে তাঁর সাজা স্থগিত করে বাসায় থেকে চিকিৎসা নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। সুস্থ হয়ে খালেদা জিয়া এখন রাজনীতি করতে চাইলে তাঁকে আগে সাজার বাকি অংশ ভোগ করতে হবে। এটিই হচ্ছে আইনের বিধান।’
আজ রোববার (১১ জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির মিলনায়তনে ল’ রিপোর্টার্স ফোরাম (এলআরএফ) আয়োজিত মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন আইনমন্ত্রী। এলআরএফ সভাপতি আশুতোষ সরকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সরোয়ার হোসেন ভূঁঞা। এ সময় আইনমন্ত্রী সমসাময়িক রাজনৈতিক বিষয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন।
সুস্থ নির্বাচনের স্বার্থে সংবিধানের কোনো একটি বিধানের আলোকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা যায় কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা এখন আর আমাদের সংবিধানে নেই। আদালতের আদেশে এটি বাতিল হয়ে গেছে।’
উচ্চআদালত আরও দুই মেয়াদের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বহাল রাখার পক্ষে মত দিয়ে পর্যবেক্ষণ দিয়েছিল। সরকার সংসদে তাদের দুই তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার বলে এটি বাতিল করেছে। এটি আদালতের ঘাড়ে বন্দুক রেখে পাখি শিকারের শামিল কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘পৃথিবীর উন্নত ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলোতে এ ব্যবস্থা ছাড়াই নির্বাচন হচ্ছে। আমাদের দেশেও নির্বাচন কমিশন এখন শক্তিশালী। তারা নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারছে। কাজেই আমাদের দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার প্রয়োজন নেই।’
আওয়ামী লীগ ভবিষ্যতে আবার বিরোধী দলে গেলে নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে অতীতের মতো আন্দোলন করতে হতে পারে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, ‘আমাদের সরকারের সময়ে যে কয়েকটি নির্বাচন হয়েছে, তার সবগুলোই অবাধ ও সুষ্ঠু হয়েছে। কিছু বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া সব নির্বাচনই গ্রহণযোগ্য হয়েছে। ভবিষ্যতে যে-ই ক্ষমতায় আসুক, আশা করি এ ধারাবাহিকতা রক্ষা করবে।’
২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন দুটিকে আপনি কীভাবে মূল্যায়ন করছেন? সেগুলোও কি সুষ্ঠুভাবে হয়েছে বলে আপনি মনে করেন, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘অফকোর্স, ওই নির্বাচনও সুষ্ঠুভাবে হয়েছে। বিএনপি ২০১৮ সালের নির্বাচনে খারাপ করেছে, এটি তাদের রাজনৈতিক ব্যর্থতা। এজন্য সরকার কিংবা নির্বাচন কমিশন দায়ী নয়।’
জামায়াতে ইসলামীকে দীর্ঘ ১০ বছর পর সমাবেশের অনুমতি দেওয়া কতটা আইনসঙ্গত হয়েছে, এমন প্রশ্নের জবাবে আনিসুল হক বলেন, ‘আইন সংশোধনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এছাড়া বিচার নিষ্পত্তি হয়নি। এমন অবস্থায় জামায়াতকে সভা-সমাবেশের অনুমতি দেওয়াটা আইনের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়।’
উগান্ডা ও নাইজেরিয়ার পর বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মার্কিন সরকারের নতুন ভিসা নীতি ঘোষণায় জাতিকে বিব্রত ও হেয় করেছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘বিষয়টি একজন নাগরিক হিসেবে আমাদের কারও জন্যই মর্যাদার নয়। এ নীতি আমাকে হেয় করেছে।’