হোটেল শেরাটন বুঝে নিতে ডিএনসিসিকে হাইকোর্টের নির্দেশ
রাজধানীর অভিজাত এলাকা বনানীতে সিটি করপোরেশনের ৬০ কাঠা জায়গায় ২৮তলা ভবন বানিয়ে পাঁচ তারকা হোটেল শেরাটন তৈরি করা হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী, সেই হোটেল ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনকে (ডিএনসিসি) বুঝে নিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে আগামী তিন মাসের মধ্যে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
আজ সোমবার (১২ জুন) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
এর আগে গতকাল বনানীতে উত্তর সিটি করপোরেশনের ৬০ কাঠা জায়গায় ২৮তলা ভবন বানিয়ে পাঁচ তারকা হোটেল শেরাটন তৈরির ঘটনার তদন্ত চেয়ে রিট করা হয়। হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ব্যারিস্টার সুমন এই রিট করেন। স্থানীয় সরকার সচিব, রাজউক, দুর্নীতি দমন কমিশনসহ সংশ্লিষ্টদের রিটে বিবাদী করা হয়েছে।
গত ১ জুন একটি জাতীয় দৈনিকে ‘সরকারি জমিতে পাঁচ তারকা হোটেল’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন সংযুক্ত করে রিট আবেদনটি দায়ের করা হয়। সেই প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজধানীর অভিজাত এলাকা বনানীতে সিটি কর্পোরেশনের ৬০ কাঠা জায়গায় ২৮তলা ভবন বানিয়ে একাই ভোগদখল করছে বোরাক রিয়েল এস্টেট প্রাইভেট লিমিটেড। সেখানে তৈরি করা হয়েছে পাঁচ তারকা হোটেল।’
ডিএনসিসি কর্তৃপক্ষ বলছে, বোরাক রিয়েল এস্টেটের সঙ্গে চুক্তি ছিল ১৪তলা ভবন নির্মাণের, যার ৩০ শতাংশ পাবে সিটি করপোরেশন, বাকিটা তাদের। সিটি করপোরেশনের হিসেব অনুযায়ী, তাদের ভাগের সম্পদের মূল্য প্রায় ৫৫০ কোটি টাকা। কিন্তু, সে হিস্যা গত এক দশকেও বুঝে পায়নি তারা। উল্টো চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন করে ১৪তলার স্থলে ২৮তলা ভবন নির্মাণ করে পুরোটাই নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছে আবাসন কোম্পানিটি।
অবিভক্ত ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সাদেক হোসেন খোকার সময়ে বোরাক রিয়াল এস্টেটের সঙ্গে করপোরেশনের চুক্তি হয়। চুক্তি অনুযায়ী, বনানী কাঁচাবাজারের পশ্চিম পাশে ও বনানী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের উত্তর পাশে সিটি করপোরেশনের জমিতে ‘বনানী সুপার মার্কেট কাম হাউজিং কমপ্লেক্স’ নির্মাণ করা হবে। ভবনের ৩০ শতাংশ পাবে সিটি করপোরেশন, ৭০ শতাংশ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান।
সিটি করপোরেশন বিভক্ত হওয়ার পর বনানীর এই সম্পত্তি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ভাগে পড়েছে। উত্তর সিটির মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘বনানীর মতো এলাকায় করপোরেশনের জমিতে ভবন নির্মাণে যে অসম চুক্তি হয়েছে, তা দেখেই বোঝা যাচ্ছে। তখন কিছু সুবিধাভোগী চক্র এই অসম চুক্তি অনুমোদন দিয়েছে।’