জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে : মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেছেন, লড়াই শুরু হয়ে গেছে। এক-দুইদিনে তো লড়াই শেষ হয় না। কারণ প্রতিপক্ষ খুন, গুম করতে দ্বিধা করে না। রাষ্ট্রযন্ত্রকে হাতে নিয়ে নিয়েছে। পুলিশের কাছে যাবেন অভিযোগ লেখাতে পারবেন না। কোর্টে যাবেন সেখানে কোনো বিচার পাবেন না। আপনি কোথায় যাবেন? এই ব্যবস্থা দূর করতে হবে। এজন্যই সরকারকে সরাতে হবে। সরকারকে সরিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
রাজধানীর ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আজ বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) দুপুরে জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক ফোরামের উদ্যোগে সংবাদপত্রের কালো দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
সরকারকে ছদ্মবেশি বাকশাল আখ্যা দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, এরা আমাদের কথা বলা, লেখা, সংগঠন করার অধিকার বন্ধ করে দিয়েছে। জিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা খর্ব করা হয়েছে। সেলফ সেন্সরশিপের মাধ্যমে সাংবাদিকরা এখন লিখতে পারছে না। দেখা হলে সাংবাদিকদের প্রশ্ন করা হলে তারা চাপের কথা বলেন। সেদিন এক সম্পাদক বললেন- সব বিজ্ঞাপন বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে। অথচ তারা বলে, ঠিকঠাক মতো ভোট হচ্ছে। গণতন্ত্র ঠিক আছে।
আওয়ামী লীগ কখনো ভিন্নমত সহ্য করতে পারে না এমন দাবি করে মির্জা ফখরুল বলেন, এখন এই শব্দটা (আওয়ামী লীগ) গালিতে পরিণত হয়েছে। নির্বাচন সামনে রেখে তারা সব সাজিয়ে নিতে চায়।
আওয়ামী লীগ তাদের মতো নির্বাচন শুরু করে দিয়েছে এমনটা দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, তাদের যে নির্বাচন তা কিন্তু শুরু হয়েছে। রিগিং করতে হবে। সব নিয়ন্ত্রণে নিতে হবে। কন্ট্রোল করতে হবে। কয়দিন আগে পত্রিকায় দেখলাম পুলিশে ব্যাপক রদবদল। ব্যাপক পদোন্নতি। সাড়ে সাতশ জনকে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। আর পোস্টিংগুলো সব করা হচ্ছে। অর্থাৎ মাথার মধ্যে নির্বাচন। আবার গতকাল দেখলাম সচিবদের পরিবর্তন আনা হচ্ছে। অর্থাৎ প্রশাসনেও পরিবর্তন আনা হচ্ছে। একটাই উদ্দেশ্য নির্বাচনকে সামনে রেখে তাদের মতো করে সব সাজিয়ে নিতে চায়।
সরকারের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, সবাই এমনটাই চায়। বাকশাল করেছিলেন আপনারা। সবকিছু সাজিয়ে কয়দিন রাখতে পেরেছিলেন। ফেরাউন, নমরুদও চেয়েছিল। এরশাদ সাহেবও চেয়েছিলেন আজীবন ক্ষমতায় থাকতে। কিন্তু হয়নি। পারে না। কারণ মানুষ যখন জেগে ওঠে তখন সেটা আর সম্ভব হয় না।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমাদের এখন কোনো বিকল্প নেই। একটাই পথ হলো রাস্তা। এই রাস্তায় নেমে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনকে বেগবান করতে হবে।
জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক ফোরামের আহ্বায়ক মোশাররফ আহমেদ ঠাকুরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিএনপি নেতা শামসুজ্জামান দুদু, রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, জহির উদ্দিন স্বপন, কাদের গণি চৌধুরী প্রমুখ।