শেষ সম্বল ফিরে পেতে আমরণ অনশনে বাবা-ছেলে
শেষ সম্বল ফিরে পেতে চান এক অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য। হুমায়ুন কবির চৌধুরী নামে তিনি ও তার ছেলে বসেছেন আমরণ অনশনে। আজ বৃহস্পতিবার (২২ জুন) দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনশনে বসা বাবা-ছেলের দাবি, কিশোরগঞ্জের নিকলী সদর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তাসহ কয়েকজন ঘুষের বিনিময়ে তাদের শেষ সম্বল ফিরিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন। সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিলে মারধর করা হয়। পরে নিকলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েও পাননি প্রতিকার। তাই আমরণ অনশনে বসেছেন।
হুমায়ুন কবির চৌধুরী এনটিভি অনলাইনকে জানান, বাড়ির জমি খারিজ করতে গিয়ে সদর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মজিবুর রহমানের কাছে হয়রানির শিকার হয়েছেন। তিনি বলেন, ‘৬৭ শতাংশের বসতবাড়ির যার কাছ থেকে কিনেছি, সেটি বহুদিন আগেই খারিজ করা হয়েছি। হঠাৎ কিছুদিন আগে কীভাবে যেনো আমার খারিজ বাতিল হয়ে যায়। পরে কিশোরগঞ্জ বিজ্ঞ প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালতে মামলা দায়ের করি এবং কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও নিকলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর আবেদন করলে নিকলী সদর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মজিবুর রহমান আমাকে খারিজ ফিরিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে মোটা অংকের টাকা দাবি করেন। ২০২২ সালের ২০ জানুয়ারি সন্ধ্যায় আমাকে অফিসে টাকা নিয়ে যেতে বলেন। আমি রাজি না হওয়ায় এবং প্রতিবাদ করলে কয়েকজন কর্মচারীকে সঙ্গে নিয়ে আমাকে আটকে মারধর করেন। পরে ঘটনাস্থলে নিকলী সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রীতিলতা বর্মন সবার কথা শুনে আমাকে মারধরের কোনো বিচার না করে উল্টো আমাকে বাড়ি চলে যেতে বলেন। এ সময় আমার শারীরিক অবস্থা খারাপ হয়ে পড়লে আমি হাসপাতালে ভর্তি হই।’
হুমায়ুন দাবি করে বলেন, ‘আমার নামে তখন সদর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মজিবুর রহমান মিথ্যা মামলা দেন। পুলিশের তদন্তে আসল তথ্য বের হয়ে আসে।’
হুমায়ুন কবির আরও দাবি করেন, ‘প্রভাবশালী তহসিলদার, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এবং দপ্তরের কতিপয় কর্তাব্যক্তির কারণে আমার ছয় কোটি টাকা মূল্যের বসতবাড়ি বেহাত হওয়ার উপক্রম হয়েছে। আমার সামনে এখন মৃত্যু ছাড়া বাঁচার মতো কোনো পথ নেই। এজন্য আজ আমি আমরণ অনশনে বসেছি।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সদর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মজিবুর রহমান তার বিরুদ্ধে করা হুমায়ুন কবিরের তথ্য সঠিক না বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘এই বিষয়গুলো নিয়ে আমাদের এসিল্যান্ড (উপজেলা সহকারী কমিশনার) স্যারের সঙ্গে কথা বলুন।’
নিকলী সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রীতিলতা বর্মন বলেন, ‘উনার খারিজ যেটা বাতিল হয়েছে, সেটা আদালতের রায়ের মাধ্যমে। আর এখানে এই বিষয়টি নিয়ে আমার কিছু করার নেই। কারণ, এই জমি খারিজের বিষয়টা আদালতে বিচারাধীন। আদালতে তিনি আপিল করেছেন, আপিলের রায় এখনও আসেনি। আদালত যে রায় দেবেন, আমি সেটা বাস্তবায়ন করব। এখানে আমি ব্যক্তিগতভাবে কিছু করতে পারি না।’