মসলা যারা এক কেজি কিনত, তারা কিনছে আড়াইশ গ্রাম!
ঈদের আর মাত্র বাকি একদিন। অনেকের কোরবানির পশু ইতোমধ্যে কেনাকাটা হয়ে গেছে। শেষ মুহূর্তে মসলার কেনাকাটার অপক্ষোয়। তবে আগের মতো সেই জৌলুস নেই মসলার বাজারে। বৃষ্টির কারণে ক্রেতা কম আসছে। আবার দাম ঊর্ধ্বমুখী হওয়ায় চহিদার তুলনায় পরিমাণে কম কিনছে অধিকাংশ মানুষ। অনেকে মসলার ঊর্ধ্বমুখী দাম শুনে চোখে মুখে হতাশা ব্যক্ত করছেন। আজ বুধবার (২৮ জুন) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, ডেমরা, যাত্রাবাড়ী এলাকা ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
রাজধানীর কারওয়ান বাজারের মসলার ব্যবসায়ী সোহেল মিয়া এনটিভি অনলাইনকে জানান, ‘ভাল মানের জিরা এক কেজি এক হাজার ৫০ টাকা, যা গত বছর কোরবানির ঈদে বিক্রি হয়েছিল ৪০০ টাকায়। এক বছরের ব্যবধানে দাম প্রায় তিনগুণ বেড়েছে। এ কারণে যারা আগে এক কেজি কিনত তারা এ বছর ২৫০ গ্রাম কিনছে। অপরদিকে এলাচ আগে যারা আড়াইশ গ্রাম কিনতো তারা এ বছর ৫০ গ্রাম বা ১০০ গ্রাম কিনছে। প্রায় মানুষ মাংসের মসলা কেনার ক্ষেত্রে পরিমাণ কমিয়ে দিয়েছে। দাম বাড়তি থাকায় আগের মতো বিক্রি হচ্ছে না।’
কারওয়ান বাজারের মসলার দোকানে কথা হয় চাকরিজীবী মো. রুবেল হোসেনের সাথে। তিনি জানান, ‘ভাই একটি প্রাইভেট চাকরি করি। ঈদ উপলক্ষে মসলাটা বেশি কেনা হয়। কিন্তু মসলার যে পরিমাণ দাম বেড়েছে, বুকে কষ্ট নিয়ে কিনতে হচ্ছে। জিরা, এলাচ, গোলমরিচ, তেজপাতা ও দারচিনির যে দাম, এ কারণে পরিমাণ অনেক কমিয়ে কিনতে হচ্ছে।’
কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, লবঙ্গ প্রতি কেজি ১৫০০-১৬০০ টাকা, এলাচ কেজি প্রতি ২২০০-২৮০০ টাকা, গোলমরিচ (সাদা) ১৬০০ টাকা, গোলমরিচ (কালো) ৮৫০-৯০০ টাকা এবং ধনিয়ার গুঁড়া বিক্রি হচ্ছে ২২০-২৪০ টাকায়। অন্যদিকে দেশি পেঁয়াজ কেজি প্রতি ৭৫-৮০ টাকা, ভারতীয় বড় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০, রসুন কেজি প্রতি ১৮০, দেশি রসুন ১৬০ এবং আদা ৩৬০-৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
কারওয়ান বাজার অপর ব্যবসায়ী জহির হোসেন এনটিভি অনলাইনকে বলেন, সবাই গরু-ছাগল কেনার পর ঈদের আগের দিন মসলার বাজারে আসে। কিন্তু বৃষ্টির কারণে ক্রেতা কম। তাছাড়া মসলার অনেক দাম বাড়ায় প্রতি সপ্তাহে দাম পরিবর্তন হচ্ছে। যারা আমদানি করে সেখানে থেকে দাম বৃদ্ধি করলে এর প্রভাব খুচরা বাজারে পড়বে, এটাই স্বাভাবিক। বর্তমানে ব্যবসায়ীরা চাইলেই এলসি খুলতে পারেন না। যার প্রভাব পড়েছে মসলার দামে।
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির বিষয়ে জানতে কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, যে কোনো উৎসবের আগে আমাদের দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাওয়া স্বাভাবিক নিয়ম হয়ে গেছে। বাজার যাদের তদারকি করার কথা, তাদের কোনো ভূমিকা না থাকায় এমন অবস্থা। দাম নিয়ন্ত্রণে সংস্থাগুলোকে তদারকি জোরদার করতে হবে।