শোলাকিয়ায় ১৯৬তম ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত
মুষলধারে বৃষ্টির মধ্যে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ময়দানে ঈদুল আজহার জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে। এটি ছিল এই মাঠের ১৯৬তম ঈদুল আজহার জামাত। আজ বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) সকালে বৈরী আবহাওয়া উপেক্ষা করে মুষলধারে বৃষ্টির মধ্যে কয়েক হাজার মুসল্লি ঈদ জামাত আদায় করেন।
আজ সকাল থেকে শুরু হওয়া টানা বর্ষণের কারণে ঈদগাহ মাঠের অনেক স্থানে পানি জমে যায় এবং মাঠ কর্দমাক্ত হয়ে পড়ে। রেওয়াজ অনুযায়ী জামাত শুরুর আগে তিনবার বন্দুকের গুলি ফুটিয়ে নামাজের প্রস্তুতি নেওয়ার সংকেত দেওয়া হয়। সকাল ১০টায় শুরু হওয়া ঈদের জামাত পরিচালনা করেন স্থানীয় মারকাজ মসজিদের ইমাম মাওলানা হিফজুর রহমান খান। জামাত শেষে দেশের মানুষের কল্যাণ কামনায় মোনাজাত করা হয়।
জেলা প্রশাসক জেলা প্রশাসক মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘দূর-দূরান্তের মুসল্লিদের যাতায়াতের সুবিধার্থে আজ সকালে ময়মনসিংহ ও ভৈরব থেকে শোলাকিয়া স্পেশাল নামে দুটি বিশেষ ট্রেন চলাচল করেছে। মাঠে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, সীমানা প্রাচীর রং করা, ওজুখানা সংস্কারসহ সুষ্ঠুভাবে জামাত অনুষ্ঠানের ব্যাপক প্রস্তুতি আগেই সম্পন্ন করা হয়। যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় একাধিক মেডিকেল টিম, অ্যাম্বুলেন্স ও ফায়ার সার্ভিসও দায়িত্ব পালন করেছে।’
জেলা পুলিশ সুপার মো. রাসেল শেখ বলেন, ‘সুষ্ঠুভাবে জামাত সম্পন্নের জন্য চার স্তরের কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থার গ্রহণ করা হয় এবং ছয়টি ওয়াচ টাওয়ারসহ পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা সাহায্যে নজরদারি করা হয়। পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ ঈদগাহ মাঠসহ জেলা শহরের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে দায়িত্ব পালন করেছে।’
মসনদ-ই-আলা ঈশা খাঁর ষষ্ঠ বংশধর হজরত দেওয়ান খান বাহাদুর কিশোরগঞ্জের জমিদারি প্রতিষ্ঠার পর ইংরেজি ১৮২৮ সনে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পূর্ব প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে প্রায় সাত একর জমির ওপর এ ঈদগাহ প্রতিষ্ঠা করেন। ওই বছর অনুষ্ঠিত প্রথম জামাতে সোয়া লাখ মুসুল্লি অংশগ্রহণ করেন বলে মাঠের নাম হয় যায় ‘সোয়া লাখি মাঠ’। সেখান থেকে উচ্চারণের বিবর্তনে পরিণত হয়ে নাম ধারণ করেছে আজকের শোলাকিয়া মাঠে।