পদত্যাগের ঘোষণা ছাড়া সরকারের সঙ্গে সংলাপের প্রশ্নই ওঠে না : মির্জা ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক বা নিরপেক্ষ, যাই বলা হোক না কেন, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। তার আগে এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। এই ঘোষণা সরকারকে সবার আগে দিতে হবে। এ ছাড়া সংলাপের কোনো প্রশ্ন ওঠে না।’
আজ বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ১২ দলীয় জোটের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মির্জা ফখরুল এ কথা বলেন।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘জনগণের অধিকার, কথা বলার অধিকার, বাকস্বাধীনতা এগুলো পুনরুদ্ধার করার জন্য আমরা আন্দোলন করছি। বর্তমান অবৈধ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকেই অত্যন্ত সচেতনভাবে বাংলাদেশের সকল অর্জনগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘ইতোমধ্যে আমাদের আন্দোলন একটা চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে। এই বছরটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এই আওয়ামী লীগ সরকার এই বছরেই একটি পাতানো নির্বাচনে জন্য পায়তারা করছে। পাতানো নির্বাচন এদেশের মানুষ কখনও গ্রহণ করবে না। আমরা পরিষ্কারভাবে বলে দিতে চাই, এই অবৈধ আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। এদেশের মানুষ মেনে নেবে না। আমাদের পক্ষ থেকে দাবি উত্থাপন করা হয়েছে, পরিষ্কারভাবে বলেছি—এই সরকারকে পদত্যাগ করে নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা চূড়ান্ত আন্দোলনে যাওয়ার আগে সম্মিলিতভাবে যৌথ ঘোষণাপত্র প্রকাশ করবো। আর এরজন্যই আজকের বৈঠক।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমরা কোনো ফরম্যাটে সংলাপে যেতে চাচ্ছি না। তত্ত্বাবধায়ক বা নিরপেক্ষ যাই বলুক না কেন, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। তার আগে এই সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে। এই ঘোষণা সরকারকে সবার আগে দিতে হবে এবং পদত্যাগ করে দিতে হবে। এ ছাড়া কোনো প্রশ্ন উঠবে না।’
সাংবাদিকদের আরেক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন করে যদি আবার ক্ষমতায় আসে, আমরা তাতে স্বাগত জানাব।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আগামী নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন। এই নির্বাচনের ওপর নির্ভর করবে জাতির অস্তিত্ব থাকবে কি থাকবে না, জাতির স্বাধীনতা থাকবে কি থাকবে না, জাতি একটি কল্যাণকর রাষ্ট্র তৈরি করতে পারবে কি পারবে না। সেজন্য আমরা বলেছি, নির্বাচনটা অবশ্যই নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে হতে হবে। সরকারকে পদত্যাগ করতে হবে।’
বৈঠকে বিএনপির পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলিমা রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু।
১২ দলের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মুহাম্মদ ইবরাহিম বীর প্রতীক, জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, জমিয়তে ওলামায় ইসলামের মহাসচিব মুফতি গোলাম মুহিউদ্দিন ইকরাম, ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলাম, জাগপার সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট রাশেদ প্রধান, ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব আবদুল করিম, বাংলাদেশ জাস্টিস পার্টির সভাপতি ড. সৈয়দ জাভেদ মোহাম্মাদ সালেহ উদ্দিন, বাংলাদেশ মুসলিম লীগের (বিএমএল) মহাসচিব মো. নজরুল ইসলাম, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির মহাসচিব অ্যাডভোকেট আবুল কাশেম ও জাতীয় পার্টির মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকন।