হঠাৎ অভিজাত এলাকায় মেয়র আতিক, দেখলেন মশার ওড়াউড়ি
রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার অভিজাত এলাকা জাপান গার্ডেন সিটি আকস্মিক পরিদর্শন করেছেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। এই এলাকার কয়েকটি বহুতল ভবনের বেইজমেন্ট ঘুরে দেখেন তিনি। তিনটি ভবনের বেইজমেন্টে গিয়ে প্রতিটিতেই গাড়ি ধোয়ার পর জমে থাকা পানিতে এডিস মশার অসংখ্য লার্ভা দেখতে পান মেয়র। মশাও সেখানে ওড়াউড়ি করছিল। সব দেখে আতিক বলেন, ‘মশা নিধন অভিযানে আমি কোথায় যাব, কেউ কিছুই জানেন না। আগে থেকে জানিয়ে গেলে সেখানে সবকিছু পরিষ্কার করা থাকে। প্রকৃত অবস্থা দেখতে কাউকে না জানিয়ে বিভিন্ন ওয়ার্ডে আকস্মিক পরিদর্শনে যাব। এক্ষেত্রে আমি কাউকে বিশ্বাস করি না। যেখানে ইচ্ছা সেখানে যাব এবং ব্যবস্থা নেব।’
আজ শনিবার (৮ জুলাই) সকালে আকস্মিক পরিদর্শনে গিয়ে ডিএনসিসির মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘ভবনের ভেতরে জমে থাকা পানি সিটি করপোরেশন পরিষ্কার করবে না। এসব ভবনে আমাদের কর্মীরা ঢুকতে পারেন না। শুধু এ এলাকা না, ঢাকার অনেক ভবনে, বাড়িতে আমাদের কর্মীদের ঢুকতে বাধা দেওয়া হয়। অন্যান্য জায়গার চেয়ে বাসা-বাড়ির ভেতরে জমে থাকা পানিতে এডিসের লার্ভা বেশি জন্মে।’
মেয়র বলেন, ‘গবেষণায় উঠে এসেছে, বেইজমেন্টে যেখানে গাড়ি রাখা হয় ও গাড়ি ধোয়া হয়, সেখানে প্রায় ৪৮ শতাংশ এডিসের লার্ভা জন্মায়। তাই ভবনের ভেতরের পরিবেশ পরিষ্কার রাখার দায়িত্ব ভবন মালিককেই নিতে হবে।’
ডিএনসিসি মেয়র বলেন, ‘জাপান গার্ডেন সিটি একটি অভিজাত এলাকা। এখানে কর্তৃপক্ষ সার্ভিস চার্জ নেন। তারা ইলেকশন করেন। অথচ এখানে মশার চাষ হচ্ছে। এটি অত্যন্ত দুঃখজনক। যে পরিমাণ মশা এখানে আছে, জাপান গার্ডেনের নাম চেঞ্জ করে লার্ভা গার্ডেন রাখা দরকার। এখানে ২৩টি ভবনে কয়েক হাজার মানুষ বাস করে। অথচ প্রতিটি ভবনে যে পরিমাণ লার্ভা, তাতে জাপান গার্ডেন সিটি একটি মৃত্যুকূপে পরিণত হয়েছে।’
সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘বর্ষা মৌসুমের আগে থেকেই আমরা মশা নিধনে মাঠে কাজ করছি। নিয়মিত লার্ভিসাইডিং ও এডিসের প্রজননস্থল ধ্বংসের পাশাপাশি ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে সচেতনতামূলক প্রচারাভিযান পরিচালনা করছি। প্রচারাভিযানে বিএনসিসি ও বাংলাদেশ স্কাউটের সদস্যদের যুক্ত করেছি। গত মাসে ডিএনসিসির আওতাধীন এলাকার মসজিদ ও মাদরাসার ইমাম ও খতিবদের সঙ্গে এবং স্কুল ও কলেজের প্রধান শিক্ষক ও অধ্যক্ষের সঙ্গে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে করণীয় বিষয়ে মতবিনিময় সভা করেছি। কিন্তু সিটি করপোরেশনের একার পক্ষে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ সম্ভব না। বাসা বাড়ির ভেতরে লার্ভার দায়িত্ব আমাদের কর্মীরা নেবে না।’
আতিকুল ইসলাম আরও বলেন, ‘আমি মাঠে আছি, আমার সব কাউন্সিলর মাঠে থাকবে। আমি বিভিন্ন আবাসিক এলাকার নেতৃবৃন্দ, সোসাইটির প্রতিনিধিদের আহ্বান করছি, আপনারা নিজেদের এলাকা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখুন। সবাই সহযোগিতা করলে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হবে।’
জাপান গার্ডেন সিটি পরিদর্শন শেষ করে ডিএনসিসি মেয়র মোহাম্মদপুর শেখেরটেক পিসি কালচার হাউজিং, আদাবর ও শ্যামলী এলাকার কয়েকটি নির্মাণাধীন ভবন পরিদর্শন করেন।