নিবন্ধনের দৌড়ে টিকে থাকল দুটি রাজনৈতিক দল
নতুন রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের দৌড়ে পরবর্তী ধাপের বাছাইয়ে টিকে থাকল আর মাত্র দুটি দল। আবেদন করা ১২টি দলের মধ্যে ১০টিই গেছে বাতিলের তালিকায়। যার মধ্যে ঢাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুরসহ জামায়াত সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ আসা এবি পার্টিও রয়েছে। নির্বাচন কমিশন বলছে, এই দশটি দল যে তথ্য দিয়েছিল তা মাঠ পর্যায়ে যাচাই করে গরমিল পেয়েছে তারা। আর প্রথম ধাপ অতিক্রম কার দল দুটি হলো—বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) ও বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টি (বিএসপি)।
আজ রোববার (১৬ জুলাই) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে কমিশন সভা শেষে নির্বাচন কমিশন সচিব জাহাংগীর আলম সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
ইসি সচিব জাহাংগীর আলম জানান, যাচাই-বাছাই শেষে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) ও বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টির (বিএসপি) বিষয়ে আগামীকাল (সোমবার) পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে। ২৬ জুলাইয়ের মধ্যে কারও কোনো আপত্তি থাকলে তা নিষ্পত্তি করে কমিশন পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।
দলগুলোর বিষয়ে ধাপে-ধাপে যাচাই-বাছাই করা হয়েছে জানিয়ে জাহাংগীর আলম বলেন, ‘মাঠ পর্যায়ে অফিস থাকার কথা, কমিটি থাকার কথা, জনবল থাকার কথা এগুলো সব যাচাই করেছি।’
পুনরায় যাচাই করে এই দুটি দলের আইন অনুযায়ী সবকিছু থাকায় গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে বলে জানান ইসি সচিব। তিনি বলেন, ‘এরপরই চূড়ান্ত হবে যে, কারা কারা নিবন্ধন পাবে। বাকি ১০টি দল যে তথ্য দিয়েছে, মাঠ পর্যায়ে যাচাই করে গরমিল পাওয়ায় তাদের আবেদন বাতিল করা হয়েছে।’
নিবন্ধন পাওয়ার দৌড়ে বাদ পড়া দলগুলো হলো—এবি পার্টি (আমার বাংলাদেশ পার্টি), বাংলাদেশ হিউম্যানিস্ট পার্টি (বিএইচপি), গণ-অধিকার পরিষদ, নাগরিক ঐক্য, বাংলাদেশ সনাতন পার্টি, বাংলাদেশ লেবার পার্টি, বাংলাদেশ মাইনরিটি জনতা পার্টি (বিএমজেপি), বাংলাদেশ পিপলস পার্টি (বিপিপি), ডেমোক্রেটিক পার্টি ও বাংলাদেশ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (বিএলডিপি)।
২০০৮ সালে সেনাসমর্থিত শাসন আমলে শামসুল হুদা কমিশন নবম সংসদ নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন প্রক্রিয়া চালু করে। বর্তমানে দেশে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৪২। নতুন রাজনৈতিক দলগুলোকে নিবন্ধন দিলে দ্বাদশ ভোটের আগে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা আরও বাড়বে। অন্যদিকে শর্ত পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় ও আদালতের নির্দেশে জামায়াতে ইসলামী, ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন, ফ্রিডম পার্টি, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক পার্টি (পিডিপি) ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) দলের নিবন্ধন বাতিল হয়েছে।
সংসদ নির্বাচনের আগে নতুন দলগুলোকে নিবন্ধন দিতে আবেদন আহ্বান করার বিধান আছে। গত বছরের ২৬ মে আবেদন আহ্বান করে ২৯ আগস্ট পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছিল বর্তমান কমিশন। পরে গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত জাফরুল্লাহ চৌধুরীর অনুরোধে সময় দুই মাস বাড়ানো হয়েছিল।
ইসির নিবন্ধন পেতে ৯৩টি রাজনৈতিক দল আবেদন করলেও তিন দফার ছাঁকুনি শেষে গত ১১ এপ্রিল প্রাথমিক বাছাইয়ে টিকে যাওয়া ১২টি দলের তালিকা প্রকাশ করেছিল আউয়াল কমিশন। এবার মাত্র ২টি দল টিকল। দাবি আপত্তি শেষে এ দুই দলের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে কমিশন।