আ.লীগ এতোটাই দেউলিয়া যে হিরো আলমের ভোটও চুরি করতে হয় : মির্জা ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়। নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। ন্যাড়া বারবার বেলতলায় যায় না, একবারই যায়। শিয়ালের কাছে কেউ মুরগি বর্গা দেয় না। দফা এক, দাবি এক—শেখ হাসিনার পদত্যাগ।’ তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগ এতোটাই দেউলিয়া যে হিরো আলমের ভোটও চুরি করতে হয়।
আজ সোমবার (১৭ জুলাই) বিকেলে খুলনা বিভাগীয় তারুণ্যের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়ে গেছে। তারা হিরো আলমকে পর্যন্ত সহ্য করতে পারছে না। আজ হিরো আলম ভোটকেন্দ্রে গেলে তাকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বের করে দেয় এবং মাটিতে ফেলে মারধর করে।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দেশে ডেঙ্গুতে বহু মানুষ মারা গেছে। অথচ মানুষকে বিপদে ফেলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিদেশ সফর করছেন। তাঁদের দেশের মানুষের প্রতি কোনো দায়বদ্ধতা নেই। অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।’
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘আমরা বলেছি—শেখ হাসিনার অধীনে কোনো নির্বাচন হবে না। এই মুহূর্তে পদত্যাগ করতে হবে। বাংলাদেশের মানুষকে জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ছারখার করে দিয়েছে। বাংলাদেশের মানুষকে শেষ করে দিয়েছে। দয়া করে সময় নষ্ট না করে পদত্যাগ করতে হবে। নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা দিতে হবে। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে। এই নির্বাচন কমিশন দিয়ে নির্বাচন হবে না। যারা হিরো আলমকে কোনো রকম নিরাপত্তা দিতে পারে না, তাদের দিয়ে কোনো নির্বাচন হবে না। তাই আমরা বলেছি, নির্বাচন কমিশন বদলাতে হবে। যারা যোগ্য তাদের আনতে হবে। নতুন একটা নির্বাচনের মধ্যদিয়ে নতুন পার্লামেন্ট তৈরি করতে হবে। সব দলের সঙ্গে আলাপ করে একটা জাতীয় ঐক্যের সরকার গঠন করে সেটাকে বাস্তবায়ন করতে হবে। সুতরাং দফা এক, দাবি এক শেখ হাসিনার পদত্যাগ।’
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণের সভাপতিত্বে প্রধান বক্তা ছিলেন যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী।
সমাবেশে প্রধান বক্তার বক্তব্যে যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু বলেন, ‘এই সরকারের ক্ষমতায় থাকার অধিকার নেই। তারা জোর করে আছে। তারা নির্যাতন-নিপীড়ন করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়। চার কোটি ৭০ লাখ ভোটারের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে এ সরকার। আমরা তাদের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিতে চাই।’ এ সময় সমাবেশে তিনি তরুণদের শপথ পাঠ করান।
স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এস এম জিলানী বলেন, ‘তরুণরা ১৪ বছর ভোটের অধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। তরুণদের ভোটের অধিকার, চাকরির বৈষম্য দূরীকরণের জন্য এই সমাবেশ। তরুণসমাজ আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্যদিয়ে তাদের অধিকার আদায় করবে। শেখ হাসিনার পতনের মধ্য দিয়ে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করব ইনশা আল্লাহ।’
সভাপতির বক্তব্যে কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ বলেন, ‘শেখ হাসিনা সরকারকে হলুদ কার্ড দেখানোর জন্য এই সমাবেশ। তরুণসমাজকে নিয়ে এই সরকারের পতন ঘটাব। সরকারের পতনের মধ্যদিয়ে সব নেতাকর্মী হত্যার বিচার করা হবে।’
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, খুলনা নগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনা, জেলা আহ্বায়ক আমীর এজাজ খান প্রমুখ।
সমাবেশে খুলনা বিভাগের বিভিন্ন স্থানে গুম, খুনের শিকার দলীয় নেতাকর্মীদের স্বজনরা তাঁদের বক্তব্য তুলে ধরেন।
সমাবেশ পরিচালনা করেন যুবদলের কেন্দ্রীয় ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন ও ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল।