লক্ষ্মীপুরে ত্রিমুখী সংঘর্ষ : নিহত ১
লক্ষ্মীপুরে আওয়ামী লীগ-বিএনপি ও পুলিশের ত্রিমুখী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় সজিব হোসেন (৩২) নামে একজনকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি উঠেছে। বলা হয়েছে, তিনি কৃষকদলের কর্মী। আজ মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) সন্ধ্যা ৬টার দিকে শহরের একটি বাসার দোতলার সিঁড়িঘর থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। আরও দাবি করা হয়েছে, এই সংঘর্ষে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি হাসান মাহমুদ ইব্রাহিমসহ অনেকে আহত হয়েছেন।
জেলা কৃষকদলের সভাপতি মাহবুব আলম মামুন ও সদর (পূর্ব) উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক দেলোয়ার হোসেন ভূঁইয়া বাবুর দাবি, তাদের শান্তিপূর্ণ পদযাত্রা কর্মসূচিতে প্রথমে কলেজ রোড এলাকায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়েছে। এরপর রামগতি-লক্ষ্মীপুর সড়কের আধুনিক হাসপাতালের সামনে পুলিশ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা বিএনপির মিছিলে হামলা চালায়। এ সময় পুলিশ বিএনপির নেতাকর্মীদের ওপর গুলি ছুড়তে থাকে। এতে জেলা ছাত্রদল সভাপতি ইব্রাহিম গুলিবিদ্ধসহ অর্ধশত নেতাকর্মী আহত হন।
সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক জয়নাল আবেদীন বলেন, হাসপাতালে আহত অবস্থায় অনেক রোগী এসেছে। এর মধ্যে গুলিবিদ্ধও রয়েছে। আরএমও ডা. আনোয়ার হোসেনও জানান, অনেকে আহত হয়ে হাসপাতালে আসেন। পরে অনেকে চলেও যান।
জেলা গোয়ান্দা পুলিশের প্রধান এ কে এম আজিজুর রহমান মিয়া বলেন, ‘আমরা শহরের ব্রিজ এলাকায় ছিলাম। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে মাঠে রয়েছি। আধুনিক হাসপালের সামনে কী হয়েছে তা বলতে পারছি না।’
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হাছিবুর রহমান বলেন, ‘পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আমাদের লোকজনের ওপর বিভিন্ন পয়েন্টে হামলা করেছে। পুলিশের গুলিতে ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হামলায় বহু নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় যুবদলের এক কর্মীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে আওয়ামী লীগের লোকজন।’
জানা গেছে, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে জেলা বিএনপির আয়োজনে পদযাত্রা কর্মসূচিতে অংশ নেন বিএনপির বিপুল নেতাকর্মী। কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন। গোডাউন রোড এলাকার বাসভবন প্রাঙ্গণ থেকেই পদযাত্রা কর্মসূচি শুরু হয়। এ্যানির দাবি, নিহত সজিব হোসেন কৃষক দলের কর্মী ছিলেন। এদিকে, আওয়ামী লীগও একই সময় শহরের উত্তর তেমুহনী এলাকা থেকে শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রা বের করে।
জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মাহফুজুজ্জামান আশরাফ বলেন, ‘বিএনপির উত্তেজিত নেতাকর্মীরা অতর্কিত হামলা চালায়। এতে আমাদের পুলিশ সদস্যরা আহত হন। পরে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।’
নিহতের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে মাহফুজুজ্জামান আশরাফ বলেন, ‘একটি মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। তবে, কী কারণে তার মৃত্যু হয়েছে তা জানা যায়নি। সব বিষয়েই তদন্ত চলছে।’