কিশোরগঞ্জে পুলিশ-বিএনপি ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, আহত শতাধিক
কিশোরগঞ্জে বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচিতে পুলিশের সঙ্গে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) দুপুরে সরকারের পদত্যাগসহ নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের এক দফা দাবিতে এই পদযাত্রার আয়োজন করে জেলা বিএনপি।
সকাল থেকেই বিভিন্ন উপজেলা ও পৌরসভা বিএনপি এবং তার অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে জেলা শহরের সরকারি গুরুদয়াল কলেজ মাঠে জমায়েত হতে থাকে। দুপুর সাড়ে ১২টায় বিএনপি পদযাত্রা করে বিভিন্ন সড়ক হয়ে রথখোলা এলাকায় পৌঁছালে পুলিশি বাধার মুখে পড়ে। এ সময় পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে পদযাত্রাটি সামনে অগ্রসর হতে চাইলে পুলিশের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়।
বাধা পেয়ে উত্তেজিত বিএনপির কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জসহ গুলিবর্ষণ ও টিয়ার গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে নেতাকর্মীদের ধাওয়া দেয়। এ সময় প্রায় আধা ঘণ্টা রথখোলা এলাকায় যান চলাচল বন্ধ থাকে এবং আতঙ্কে ব্যবসায়ীরা দোকান পাট বন্ধ করে দেন।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৭৭ রাউন্ড রাবার বুলেট ও এক রাউন্ড টিয়ার গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষের ঘটনায় শতাধিক বিএনপি নেতাকর্মী আহত হয়েছে বলে দলটির নেতারা দাবি করেছেন। এ সময় ১০ পুলিশ ও দুই সাংবাদিকও আহত হন।
সংঘর্ষের সময় নিক্ষিপ্ত ইটের আঘাতে দৈনিক মানবজমিনের স্টাফ রিপোর্টার আশরাফুল ইসলাম ও চ্যানেল টুয়েন্টি ফোরের জেলা প্রতিনিধি খায়রুল আলম ফয়সাল আহত হন।
এ ব্যাপারে জেলা বিএনপির সভাপতি শরিফুল আলম জানান, বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসুচিতে পুলিশ বিনা উসকানিতে লাঠিচার্জ ও গুলিবর্ষণ করেছে। এর ফলে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল আলম, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ সুমন, সিনিয়র সহসভাপতি মোশতাক আহমেদ শাহিন ও সাংগঠনিক সম্পাদক তারিকুজ্জমামন পার্নেল, জেলা কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক সাইফুল আলম আলমগীর, জেলা ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাফিউল আলম নওশাদ, তাঁতীদল হোসেনপুর উপজেলা শাখার আহ্বায়ক মো. পারভেজসহ শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আহতরা বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
সহাকারী পুলিশ সুপার মোস্তাক সরকার জানান, দায়িত্ব পালনরত পুলিশের ওপর বিএনপির নেতাকর্মীরা অতর্কিত হামলা চালায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ লাঠিচার্জসহ রাবার বুলেট ও টিয়ার গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করেছে।
কিশোরগঞ্জ মডেল থানার পরদির্শক (তদন্ত) মো. শ্যামল মিয়া জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৭৭ রাউন্ড রাবার বুলেট ও এক রাউন্ড টিয়ার গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করেছে। সংঘর্ষে ১০ জন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে এবং ওসির গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কেউ আটক হয়নি।