সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় আমিরুল ইসলাম (৫২) নামে এক কৃষককে লোহার রড ও হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় করা মামলার প্রধান আসামি টুটুল প্রামানিককে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছেন র‌্যাব ১-এর সদস্যরা। গতকাল বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) টুটুল তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

টুটুল প্রামানিকের বাড়ি উল্লাপাড়া উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের গোনাইগাঁতী গ্রামে।

উল্লাপাড়া মডেল থানার ডিউটি অফিসার আবুল কালাম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, গতকাল টুটুল প্রামানিককে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব সদস্যরা। আজ শুক্রবার সকালে তাঁকে উল্লাপাড়া মডেল থানায় হস্তান্তর করা হলে দুপুরে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

মামলার অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, নিহত কৃষক আমিরুল ইসলামের সঙ্গে আসামিদের পূর্ব থেকে বিরোধ ও শত্রুতা চলে আসছিল। মামলার ১ নম্বর আসামি উল্লাপাড়া উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৬নং ওয়ার্ডের সভাপতি আব্দুল হাই বিভিন্ন বিচার শালিস করেন এবং গ্রামের আসহায় মানুষের কাছ থেকে টাকা নেন। এসব কথা লোকজন বলতে গেলে তাদের হুমকি ও ভয়ভীতি দেখানো হয়।

ঘটনার কিছু দিন আগে গ্রামের লোকজনের মধ্যে নলকূপের স্কিম স্থাপন নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। এ নিয়ে শালিস বৈঠক হয়।  বৈঠকে  স্কিম-মালিকদের কিছু টাকা আওয়ামী লীগনেতা আব্দুল হাইয়ের কাছে জমা রাখা হয়। কিন্তু এ টাকা তিনি স্কিম মালিকদের আর ফেরত দেননি। বিষয়টি নিয়ে কৃষক আমিরুল ইসলামসহ এলাকার কিছু মানুষ প্রতিবাদ জানান। এতে ক্ষুব্ধ হন আওয়ামী লীগনেতা আব্দুল হাই। পরে তিনি আমিরুল ইসলামকে খুন করার পরিকল্পনা করেন।

গত ২৬ ফেব্রুয়ার রাতে কৃষক আমিরুল ইসলাম গ্রামের একটি চায়ের দোকানের সামনে অবস্থান করছিলেন। এ সময় আওয়ামী লীগনেতা আব্দুল হাইসহ আসামিরা তাঁর ওপর হামলা চালায়। তাঁকে লোহার রড, হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে প্রথমে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে। সেখানে তাঁর অবস্থার অবনতি হলে ঢাকায় নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে পাঠানো হয়। এখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৭ ফেব্রুয়ারি সকালে তাঁর মৃত্যু হয়।

এ ঘটনায় নিহত কৃষক আমিরুল ইসলামের ছেলে নাঈম প্রামানিক বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে উল্লাপাড়া মডেল থানায় একটি হত্যা মামলাটি করেন। মামলা করার পর থেকে টুটুল প্রামানিক পলাতক ছিলেন। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করেন র‌্যাব সদস্যরা।