ব্যবসায়ী এখলাছ হত্যার ঘটনায় পেশাদার খুনীসহ গ্রেপ্তার পাঁচ
রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরের ভূমি ব্যবসায়ী মো. এখলাছ হত্যার অভিযোগের খুনের মূল পরিকল্পনাকারী মনির হোসেন ওরফে লেদার মনির নামের এক ব্যবসায়ীসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। জমির টাকা নিয়ে দ্বন্দ্বে ২০ লাখ টাকায় অংশীদারকে পেশাদার খুনীকে দিয়ে হত্যা করেন লেদার মনির। সম্প্রতি ওই পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) লালবাগ বিভাগ।
আজ শনিবার (২২ জুলাই) ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা বিভাগ) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের এই কর্মকর্তা জানান, কামরাঙ্গীরচরের ভূমি ব্যবসায়ী এখলাছ গত ২৮ জুন রাত ১০টার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। পরে, কামরাঙ্গীরচর থানায় তার পরিবারের পক্ষ থেকে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করা হয়। পরদিন সকালে হাজারীবাগ ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের পশ্চিম পাশে বস্তাবন্দি একটি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ওই মরদেহটি এখলাছের বলে শনাক্ত করে নিহতের স্বজনেরা। বিষয়টি নিয়ে ছায়াতদন্ত শুরু করে গোয়েন্দা পুলিশের লালবাগ বিভাগ।
হারুন অর রশীদ বলেন, ‘এখলাছ খুনে প্রথমে গ্রেপ্তার হন একজন ভ্যানচালক ও স্থানীয় একটি টেইলার্সের মালিক। পরে, দুজন আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তাদের দেওয়া তথ্যের সূত্র ধরে খুনের মূল পরিকল্পনাকারী লেদার মনিরকে যশোর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পাশাপাশি খুনে জড়িত ঝন্টু মোল্লা, খুনের সমন্বয়কারী এসহাক, পশাদার খুনী আবদুর রহমান ও ফয়সালকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।’
কি কারণে এখলাছকে খুন করা সেই তথ্য জানিয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, ‘কামরাঙ্গীরচরে মনির ও এখলাছের যৌথ মালিকানায় একটি জমি আছে। এই জমি অধিগ্রহণ করেছে জেলা প্রশাসন। সেখান থেকে অধিগ্রহণ বাবদ ৯০ কোটি টাকা পেত দুজন। এর মধ্যে ৩৫ কোটি টাকা পেত মনির। তবে, মনির চেয়েছিল, পুরো টাকাটা নিজের করতে। এতে বাধা দেন এখলাছ। তখন জেলা প্রশাসন টাকা দেওয়া বন্ধ করে। এ নিয়ের মনিরের মধ্যে ক্ষোভ কাজ করেছে।’
পুলিশের এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, ‘এখলাছ এক নারীকে বিয়ে করেন। বিয়ের পর তিনি জানতে পারেন, ওই নারীর সঙ্গে মনিরের সম্পর্ক রয়েছে। এ ঘটনা জানাজানি হয়ে যায়। টাকা ও নারীর বিষয়টির জেরে মনির ঝন্টু মোল্লাকে দিয়ে এখলাছকে খুন করান। এখলাছকে খুন করার জন্য ২০ লাখ টাকায় চুক্তি ছিল মনির ও ঝন্টু মোল্লার মধ্যে।’
হারুন অর রশীদ বলেন, ‘মনিরের ব্যক্তিগত সহকারী ঝন্টু মোল্লা এখলাছকে খুন করার জন্য আবদুর রহমানকে ভাড়াটে খুনী হিসেবে ঠিক করেন। পরে, রহমান ও ফয়সাল কৌশলে এখলাছকে কামরাঙ্গীরচরের স্থানীয় একটি টেইলার্সে ডেকে নেন। সেখানে শ্বাসরোধ করে এখলাছকে খুন করে মরদেহ বস্তায় ভরে ফেলে দেয় খুনিরা।’