রেনু হত্যায় দুজনের সাক্ষ্যগ্রহণ
রাজধানীর উত্তর বাড্ডায় ছেলেধরা সন্দেহে তাসলিমা বেগম রেনুকে পিটিয়ে হত্যা মামলায় দুজন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। আজ সোমবার (২৪ জুলাই) ঢাকার ষষ্ঠ অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ মোরশেদ আলমের আদালতে এই সাক্ষ্যগ্রহণ হয়।
এদিন আদালতে ময়না তদন্তকারী চিকিৎসক ডা. প্রদীপ কুমার বিশ্বাস ও দ্বিতীয় তদন্ত কর্মকর্তা বাড্ডা থানার পুলিশ পরিদর্শক আব্দুর রাজ্জাক সাক্ষ্য দেন। তাদের সাক্ষ্য শেষে আগামী ৩১ আগস্ট সাক্ষ্যগ্রহণের পরবর্তী তারিখ ধার্য করেন আদালত।
২০২১ সালের ১ এপ্রিল এই মামলায় প্রাপ্তবয়স্ক ১৩ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন বিচারক।
মামলার নথি থেকে জানা গেছে, ২০২০ সালের ২ ডিসেম্বর ১৫ জনের বিরুদ্ধে পুলিশের দাখিল করা অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন আদালত। এর আগে ২০২০ সালের ১০ সেপ্টেম্বর রাত পৌনে ৮টায় ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে রেনু হত্যা মামলায় ১৫ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) মতিঝিল বিভাগের অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও মাদক নিয়ন্ত্রণ টিম।
অভিযোগপত্রের ১৫ আসামি হলেন–মো. ইব্রাহিম ওরফে হৃদয় হোসেন মোল্লা (২০), রিয়া বেগম ওরফে ময়না বেগম (২৯), মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ ওরফে আজাদ মণ্ডল (৫০), মোহাম্মদ কামাল হোসেন (৪০), মোহাম্মদ শাহিন (৩২), মো. বাচ্চু মিয়া (৩৬), মো. বাপ্পী ওরফে শহিদুল ইসলাম (২১), মো. মুরাদ মিয়া (২৬), মো. সোহেল রানা (৩০), আসাদুল ইসলাম (২২), মো. বিল্লাল মোল্লা (৩২), মো. রাজু ওরফে রুম্মান হোসেন (২৩), মো. মহিউদ্দিন (১৮), মো. জাফর হোসেন পাটোয়ারী (১৭) ও ওয়াসিম ওরফে মো. অসীম আহম্মদ (১৪)। এর মধ্যে আসামি মহিউদ্দিন পলাতক রয়েছেন। বাকি ১৪ আসামি কারাগারে।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ২০১৯ সালের ২০ জুলাই সকালে বাড্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছেলেধরা সন্দেহে রেনুকে পিটিয়ে হত্যা করেন স্থানীয়রা। স্কুলটিতে নিজের চার বছর বয়সী মেয়েকে ভর্তি করানোর জন্য তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়েছিলেন এই নারী। এ সময় স্কুলের গেটে রেনুর পরিচয় জানতে চান সেখানে অবস্থান করা কয়েকজন অভিভাবক। পরে, তাকে প্রধান শিক্ষিকার কক্ষে নিয়ে গেলে কে বা কারা এলাকায় গুজব ছড়িয়ে দেয়, স্কুলে একজন ছেলেধরাকে আটক হয়েছে। এরপর স্থানীয় কয়েকশ মানুষ স্কুলের গেট ভেঙে রেনুকে প্রধান শিক্ষিকার কক্ষ থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে পেটাতে শুরু করে। পুলিশ রেনুকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত রেনুর বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলায়। রাজধানীর মহাখালীতে চার বছরের মেয়ে ও মাকে নিয়ে থাকতেন তিনি। মারা যাওয়ার দুই বছর আগে স্বামীর সঙ্গে তার বিচ্ছেদ হয়। তার ১১ বছরের একটি ছেলেও রয়েছে। ছেলেটি বাড্ডায় বাবার সঙ্গে থাকত।
এ ঘটনায় রেনুর ভাগ্নে নাসির উদ্দিন বাদী হয়ে বাড্ডা থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার পরে প্রধান আসামি হৃদয়, বাচ্চু, মো. বাপ্পী, মো. শাহীন, রিয়া খাতুনসহ ১৪ আসামিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।