ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সংশোধনী প্রস্তাব সেপ্টেম্বরে সংসদে তোলা হবে : আইনমন্ত্রী
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবি করে আসছে বিভিন্ন মহল। এ আইন ব্যবহারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ ইউরোপীয় ইউনিয়ন। আইনটিতে সংশোধন আনা হবে বলে আগে থেকেই জানাচ্ছিল ক্ষমতাসীন সরকারের ঊর্ধ্বতনরা। আগামী সেপ্টেম্বরে এই আইন সংশোধনের প্রস্তাব জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হবে। আইনমন্ত্রী আনিসুল হক আজ মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) এ তথ্য জানিয়েছেন।
সচিবালয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) মানবাধিকারবিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ইমন গিলমোরের সঙ্গে আজ বৈঠক করেন আইনমন্ত্রী। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
আনিসুল হক বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধির সঙ্গে আমাদের ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমি তাকে বলেছি, আমরা অবশ্যই এ আইন সংশোধনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আগামী সেপ্টেম্বরেই এ সংশোধনী জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হবে এবং আশা করছি পাস হবে।’
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কী ধরনের সংশোধন আনা হচ্ছে, এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘এটার জন্য আপনাদের একটু অপেক্ষা করতে হবে। আমি মনে করি, আপনাদের পরামর্শ সরকারের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমি এটুকু বলতে পারি, ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের যে সংশোধন হচ্ছে তাতে আপনারা সকলে খুশি হবেন।’
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং বাংলাদেশের মধ্যকার যে সম্পর্ক আছে, সেটা তার সফরে (ইমন গিলমোর) আরও জোরদার হলো। নতুন আঙ্গিকে আমাদের এই সম্পর্কটা কাজ হবে। বৈঠকে আমরা তথ্য সুরক্ষা আইন নিয়ে কথা বলেছি। ডেটা প্রটেকশন অ্যাক্ট নিয়ে অংশীজনের সঙ্গে একবার আলোচনা করার পর একটি ড্রাফট করা হয়েছে। এই ড্রাফট নিয়ে আবারও অংশীজনের সঙ্গে বসা হবে বলে জানিয়েছেন আইসিটি প্রতিমন্ত্রী।’
বৈঠকে শ্রম আইন নিয়েও কথা হয়েছে জানিয়ে এই মন্ত্রী বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি বলেছি, শ্রমিক ও শ্রম আইন নিয়ে বাংলাদেশে অনেক কাজ হয়েছে এবং বর্তমানে করছি। আগামীতেও করা হবে। যেটুকু সমস্যা আছে, সেটা আইএলওর আগামী গভর্নিং বডির মিটিংয়ে সমাধান হবে বলে আশ্বাস দিয়েছি। এ বিষয়ে আমি ইউরোপীয় ইউনিয়নের সহযোগিতা চেয়েছি।’
আনিসুল হক বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনার ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের ব্যাপারে আমরা যে আইনটি করেছি, সেটার ব্যাপারে আমি তাকে (গিলমোর) বলেছি। গত ৫০ বছরে উপমহাদেশে এ ধরনের আইন করা হয়নি বলেও জানিয়েছি। একইসঙ্গে একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনে এ আইনটি প্রয়োজন বলে জানিয়েছি। কমিশন এই আইনের আলোকেই নিয়োগপ্রাপ্ত হয়েছে বলেও আমি উল্লেখ করেছি। এটা শোনার পর তিনি বলেছেন—ইটস এ ভেরি বিগ স্টেপ।’
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘সারা পৃথিবী একটা গ্লোবাল ভিলেজ। এখানে পরস্পর পরস্পরের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখার জন্য অনেক আলাপ আলোচনায় নিয়োজিত হয়। আজকের বৈঠকটি আমি সে আলোকেই দেখছি। আমরা একটা স্বাধীন সার্বভৌমত্ব দেশ। কিন্তু, আমাদের যে সকল বন্ধু আছে, তারা আমাদের অবশ্যই অনেক কিছু জিজ্ঞাসা করতে পারেন। আবার অনেক কথা তাদেরকে জিজ্ঞাসা করতে পারি।’