গৃহবধূকে পুড়িয়ে হত্যার দায়ে শাশুড়ির মৃত্যুদণ্ড
কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে যৌতুকের জন্য গৃহবধূকে পুড়িয়ে হত্যার দায়ে শাশুড়ি পারুল আক্তারকে (৫০) মৃত্যুদণ্ডের দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) দুপুরে জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ বিচারক মো. হাবিবুল্লাহ আসামির উপস্থিতিতে এ রায় দেন। তাঁকে ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ডও করা হয়।
নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর স্পেশাল পিপি অ্যাডভোকেট এম এ আফজল রায় প্রদানের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার অপর দুই আসামি গৃহবধূর স্বামী আসিকুল হক ও ফুফু শাশুড়ি বিবি হাওয়া আক্তারকে খালাস দেন বিচারক।
এ ছাড়া আসামি মাসিকুল হক শিশু হওয়ায় শিশু আদালতে তার বিচার চলমান রয়েছে। মামলার আরেক আসামি নিহত গৃহবধূর শ্বশুর আনোয়ারুল হক খোকন বিচার চলাকালে মারা গেছেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, ২০১৩ সালে করিমগঞ্জ উপজেলার দক্ষিণ উলুখলা গ্রামের আসিকুল হকের সঙ্গে মিঠামইন উপজেলার ঘাগড়া গ্রামের নাজির মিয়ার মেয়ে পাপিয়া আক্তারের বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই নিহত শ্বশুর আনোয়ারুল হক খোকন, শাশুড়ি পারুল আক্তার, দেবর মাসিকুল হক ও ফুফু শাশুড়ি বিবি হাওয়া আক্তার লিপির পরামর্শে স্বামী আসিকুল হক দুই লাখ টাকা যৌতুকের দাবি করে অত্যাচার নির্যাতন শুরু করে। ২০১৫ সালের ২ মে অন্তঃসত্ত্বা অবস্থায় যৌতুকের জন্য তাঁকে মারপিট করে শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। পরে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে উন্নত চিকিৎসার নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭ মে তাঁর মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় নিহত পাপিয়া আক্তারের ভাই সিরাজুল ইসলাম বাদী হয়ে স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়ি, দেবর ও ফুফু শাশুড়িকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে করিমগঞ্জ থানায় মামলা করেন। । ওই বছরের ২৪ ডিসেম্বর করিমগঞ্জ থানার তৎকালীন উপপরিদর্শক (এসআই) এস এম জহিরুল ইসলাম তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট মোজাম্মেল হক মাখন মামলাটি পরিচালনা করেন।