ডিজিটাল আইনের নাম বদল আইওয়াশ ও ভাঁওতাবাজি : বিএফইউজে
বিতর্কিত ডিজিটাল নিরাপত্তা (ডিএসএ) আইনের নাম বাদ দিয়ে কিছু ধারায় সংশোধন এনে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন’ নামে নতুন একটি আইন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ইতোমধ্যে মন্ত্রিসভায় এর খসড়ার অনুমোদন হয়েছে। তবে, সরকারের এমন সিদ্ধান্তকে আইওয়াশ ও ভাঁওতাবাজি বলে আখ্যা দিয়েছে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) এর একাংশ। পাশাপাশি এই সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করেছে সংগঠনটি।
আজ মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) এক বিবৃতিতে এসব কথা জানিয়েছে বিএফইউজে।
বিবৃতিতে সংগঠনটি থেকে বলা হয়, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের নাম পরিবর্তন করে সাইবার নিরাপত্তা আইনে রূপান্তরের সিদ্ধান্ত স্রেফ ভাঁওতাবাজি ও আইওয়াশ। দেশি-বিদেশি মানবাধিকার সংগঠন ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ধোকা দেওয়ার অপচেষ্টা। প্রস্তাবিত নতুন আইনে যেসব বিধান থাকছে, তাতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সঙ্গে সাইবার নিরাপত্তা আইনের মৌলিক কোনো পার্থক্য থাকছে না। ভীতির পরিবেশ অপরিবর্তিত থাকবে এবং নতুন আইনও স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পথে অন্তরায় হবে।
বিএফইউজের সভাপতি এম আবদুল্লাহ ও মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন বিবৃতিতে বলেন, নতুন বোতলে পুরোনো পানীয় পরিবেশনের মতোই সরকার ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বদলে সাইবার নিরাপত্তা আইনের প্রস্তাবে প্রাথমিক অনুমোদন দিয়েছে। সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধি, বিশিষ্টজনসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কোনো আলোচনা ও মতামত গ্রহণ ছাড়াই নতুন আইনে মন্ত্রিসভার অনুমোদন সরকারের সদিচ্ছার প্রমাণ বহন করে না।
এতে আরও বলা হয়, নতুন আইনে বিভিন্ন ধারায় যে বিধানগুলো সন্নিবেশ করা হচ্ছে তাতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতোই স্বাধীন সাংবাদিকতা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর নিপীড়নের খড়গ ঝুলবে। মানহানির জন্যে কারাদণ্ডের পরিবর্তে ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান অনেকটা ‘যাহা লাউ, তাহাই কদু’র মতো। এত মোটা অংকের জরিমানার ঝুঁকি নিয়ে কেউই স্বাধীন, বস্তুনিষ্ঠ ও সাহসী সাংবাদিকতা করতে পারবে না। আবার জরিমানা অনাদায়ে জেলের বিধানও রাখা হয়েছে।
বিএফইউজে নেতৃবৃন্দ বলেন, নতুন আইনের কয়েকটি ধারায় সাজার মেয়াদ কিছুটা কমানো হয়েছে, তবে সামগ্রিক প্রভাব অভিন্নই থাকবে। আর জামিন অযোগ্য কয়েকটি ধারা জামিনযোগ্য করা হয়েছে তা ইতিবাচক হলেও দেশের বিচার ব্যবস্থার বর্তমান বাস্তবতায় জামিন পাওয়া না পাওয়া ক্ষমতাসীনদের ইচ্ছাধীন।