খালেদা জিয়াকে আরও কয়েকদিন থাকতে হবে হাসপাতালে
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আবারও পুরোনো শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। এ ছাড়া নতুন করে লিভারের কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে। এর ফলে তাঁর ওজন বেড়ে গেছে। শ্বাস-প্রশ্বাসে কষ্ট হচ্ছে। ব্লাডপ্রেশার ও রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা ওঠা-নামা করছে। এগুলো নিয়ন্ত্রণে মেডিকেল বোর্ড সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন। চিকিৎসরা বিদেশে মাল্টিপল ডিজিজ সেন্টারে তাঁর চিকিৎসার তাগিদ দিয়েছেন।
আজ বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) বেগম খালেদা জিয়ার মেডিকেল বোর্ডের একজন সদস্য এসব তথ্য জানান।
মেডিকেল বোর্ডের ওই সদস্য বলেন, ‘ম্যাডাম সহজে হাসপাতালে যেতে চান না। ১৫ দিন পরপর হাসপাতলে গিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে পারলে ভাল হতো। বাসায় রেখে সব চিকিৎসা সম্ভব হয় না। এবার দেড় মাস পর হাসপাতালে এসেছেন। পুরনো জটিলতা দেখা দিয়েছে।’
ওই চিকিৎসক জানান, খালেদা জিয়ার একাধিক টেস্ট করানো হয়েছে। তাঁকে আরও ৪-৫ দিন হাসপাতালে থাকতে হবে। লিভারের কিছু চিকিৎসা দেশে নেই। তাই মেডিকেল বোর্ড তাঁকে মাল্টিপল ডিজিজ সেন্টারে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। বোর্ড এ পর্যন্ত দুই দফায় বৈঠক করেছে। যেখানে দেশি-বিদেশি ডজনখানেক চিকিৎসক অংশ নেন।
জানা গেছে, বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে হাসপাতালে আছেন তার গৃহপরিচারিকা ফাতেমা আক্তার ও স্টাফ রূপা। আর মাসুদ নামে নিরাপত্তারক্ষী গুলশানের বাসা ফিরোজা থেকে হাসপাতালে খাবার নিয়ে যান।
এর আগে শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে জরুরি ভিত্তিতে গত ১০ জুন হাসপাতালে যান বেগম খালেদা জিয়া। প্রায় দুই সপ্তাহ চিকিৎসা নিয়ে ২৪ জুন সন্ধ্যায় হাসপাতাল থেকে বাসায় ফেরেন তিনি। এর ঠিক দেড় মাস পর গতকাল বুধবার আবারও তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বেগম খালেদা জিয়া আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, চোখের সমস্যাসহ বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ভুগছেন। গত বছর সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর দেহে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি বেগম খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন বকশীবাজার আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ আদালত। রায় ঘোষণার পর তাঁকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রাখা হয়। ওই বছরের ৩০ অক্টোবর বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে করা আপিলে আরও পাঁচ বছরের সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করেন হাইকোর্ট। একই বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বেগম খালেদা জিয়ার সাত বছরের সাজা হয়। করোনাকালে সরকারের নির্বাহী আদেশে মুক্তি পাওয়ার পর থেকে ৭৮ বছর বয়সী বেগম খালেদা জিয়া গুলশানে তার বাসা ‘ফিরোজায়’ থাকছেন।