টঙ্গীতে ট্রেনে হামলা-ছিনতাইয়ের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৯
গাজীপুরের টঙ্গী রেলওয়ে জংশনে ঢাকাগামী কর্ণফুলী কমিউটার ট্রেনে হামলা ও ছিনতাইয়ের ঘটনায় মামলা হয়েছে। সেই মামলায় গ্রেপ্তার করা হয়েছে নয় জনকে। আজ শুক্রবার (১১ জুলাই) দুপুরে ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে থানায় এ মামলা হয়।
মামলার বাদী ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে আহত ট্রেনের স্টুয়ার্ড গোপাল। তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন কমলাপুর রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফেরদৌস আহমেদ বিশ্বাস।
ওসি ফেরদৌস আহমেদ বিশ্বাস বলেন, গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টায় গাজীপুরের টঙ্গীর রেলওয়ে জংশন এলাকায় চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা কর্ণফুলী কমিউটার ট্রেন ছিনতাইকারীদের কবলে পড়ে। এ ঘটনায় আজ কর্ণফুলী কমিউটার ট্রেনের স্টুয়ার্ড বাদী হয়ে কমলাপুর রেলওয়ে থানায় একটি মামলা করেন। পরে আটক করা নয় জনকে সেই মামলায় গ্রেপ্তারি দেখিয়ে অজ্ঞাতপরিচয় আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে। ডাকাতি ও অস্ত্র আইনে এ মামলা করা হয়।
ওসি জানান, এ ঘটনায় রেলওয়ে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
গ্রেপ্তার হওয়া আসামিরা হলেন মেহেদী হাসান জয় (২৬), মো. রনি (৩৫), রবিউল হাসান (৪০), মো. স্বাধীন (৩০), মো. সাইফুল ইসলাম জাকির (২৫), মো. মাসুদ (২৭), মো. নাসির (২০), মো. নয়ন হাসান (২৮) ও মো. আশিক (২২)।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টায় টঙ্গী রেলওয়ে জংশনের আউটার সিগনালে (আকিজ বেকার্সের পেছনে) চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী কর্ণফুলী কমিউটার ট্রেনে ছিনতাই ও হামলার ঘটনা ঘটে। এতে স্টুয়ার্ডসহ কয়েকজন যাত্রী আহত হন। ট্রেনের যাত্রীদের ওপর হামলা ও ছিনতাইয়ের ঘটনার পর পরই রেলওয়ে পুলিশ ও টঙ্গী পূর্ব থানা পুলিশ টঙ্গীর রেল স্টেশনের আশপাশে অভিযান চালায়। এ সময় নয়জনকে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে একটি চাইনিজ কুড়াল, দুটি সুইস গিয়ার চাকু, চাপাতি এবং ছিনতাই হওয়া কয়েকটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
টঙ্গী রেলওয়ে ফাঁড়ির ইনচার্জ ছোটন শর্মা বলেন, ছিনতাইয়ের ঘটনায় রাতভর টঙ্গীর কেরানিরটেক বস্তি, তিস্তার গেট, ব্যাংকের মাঠ বস্তিসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে নয়জনকে আটক করে রেলওয়ে পুলিশ। তাদের ঢাকার কমলাপুর থানায় নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে বলেও জানান রেলওয়ে পুলিশের এ কর্মকর্তা।
যাত্রীরা জানান, চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী কর্ণফুলী কমিউটার ট্রেনটি টঙ্গী স্টেশনে প্রবেশ করার সময় গতি কমে যায়। ঠিক সেই সময় হঠাৎ ট্রেনটিকে লক্ষ্য করে দুর্বৃত্তরা ঢিল ছুড়তে থাকে। এ সময় আতঙ্কিত যাত্রীরা আত্মরক্ষার্থে ছোটাছুটি শুরু করে। কেউ কেউ ট্রেনের মেঝেতে শুয়ে পড়ে। এতে পাথরের আঘাতে বেশ কয়েকজন আহত হন। এ সময় ট্রেনের এক স্টুয়ার্ডকে ছুরি দিয়ে আঘাত করা হয়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে গতকাল রাতেই ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ট্রেনের ভেতর আতঙ্কগ্রস্ত যাত্রীরা হুড়াহুড়ি করে ছোটাছুটি করছে। এ সময় বাহির থেকে পাথর নিক্ষেপের শব্দ শোনা যাচ্ছিল। আতঙ্কিত যাত্রী ও শিশুদের কান্না করতে দেখা যায়। কেউ কেউ মেঝেতে শুয়েও পড়েন।
ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে আহত ট্রেনের স্টুয়ার্ড বলেন, ‘আমি দরজার কাছে দাঁড়িয়েছিলাম। হঠাৎ করে পাথর ছোড়াছুড়ি দেখে দরজা বন্ধ করে দিই। পরে জানালার পাশ দিয়ে ছুরি দিয়ে আমাকে আঘাত করা হলে হাতে ক্ষত হয়।’