গুজব ছড়িয়ে গাছে বেঁধে মুখে চুনকালি, গলায় জুতার মালা
ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে মেয়ের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের গুজব ছড়িয়ে বাবাকে গাছে বেঁধে মুখে চুনকালি মাখিয়ে এবং গলায় জুতার মালা ঝুলিয়ে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল রোববার (১৩ আগস্ট) এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ইজিবাইকচালক বাবা বাদী হয়ে থানায় একটি মামলা করেছেন। সেই মামলায় গতকাল দিনগত রাতে উপজেলার কাগমারী গ্রাম থেকে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
এ বিষয়ে উপজেলার বলুহর ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের সদস্য কাগমারী গ্রামের আরিফুল ইসলাম ওরফে সাহাবুল জানান, কুমিল্লা সরকারপাড়ায় ঘটনাটি ঘটেছে। প্রতিবেশীসহ গ্রামের কতিপয় চিহ্নিত যুবক শিমুল গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন চালিয়ে মুখে চুনকালি মাখিয়ে গলায় জুতার মালা ঝুলিয়ে ভিডিও করেছে। তিনি বলেন, ‘ন্যক্কারজনক এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরাই ৯৯৯ নম্বরে ফোন করে পুলিশকে খবর দিয়েছে। পুলিশ এসে তাঁকে উদ্ধার করে।’
অভিযোগের সত্যতা আছে কি না? এমন প্রশ্নের উত্তরে মেম্বার বলেন, ‘গুজব ছড়িয়ে ঘটনাটি ঘটানো হয়েছে। ভুক্তভোগী এখন কোটচাঁদপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিচ্ছেন।’
গ্রামের অন্য একটি সূত্র বলেছে, তিন মাস আগে ভুক্তভোগীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠে। তখন তিনি স্ত্রী, মেয়ে দুই ছেলেকে নিয়ে গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে ঢাকায় চলে যান। গত শনিবার একা বাড়ি ফিরে আসার খবর পেয়ে যায় এলাকার চিহ্নিত যুবকরা। তারা ধরে ফেলে তাঁকে। এরপর এ ঘটনা ঘটে।
কোটচাঁদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঈন উদ্দিন জানান, ভুক্তভোগীর বাড়ি উপজেলার কাগমারী গ্রামের কুমিল্লাপাড়ায়। স্ত্রী সন্তান নিয়ে তিনি বর্তমানে ঢাকায় ইজিবাইক চালিয়ে সংসার নির্বাহ করে থাকেন। নিজের মেয়ের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক আছে—এমন অভিযোগ আনে প্রতিবেশীসহ এলাকার কতিপয় যুবক। গত শনিবার দেনা পরিশোধের জন্য ঢাকা থেকে বাড়িতে আসেন তিনি। গতকাল রোববার তাঁকে গাছে বেঁধে মুখে চুনকালি মেখে এবং গলায় জুতা ঝুলিয়ে নির্যাতন করে ভিডিও ধারণ করে এলাকার কতিপয় চিহ্নিত যুবক। এরপর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ওই ভিডিও ছড়িয়ে দেয় তারা। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে মনিরুলকে উদ্ধার করে। তাঁর স্ত্রী ও পরিবার লোকজন কথিত ঘটনার বিষয়ে কোনো অভিযোগ করেনি।
ওসি আরও জানান, ভুক্তভোগী বাদী হয়ে পাঁচ-ছয় জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করেছেন। পুলিশ রাতেই মামলার আসামি কাগমারী গ্রামের ইমনকে (২৫) গ্রেপ্তার করেছে। বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে। পূর্ব শত্রুতার জেরে এমন ঘটনা ঘটতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) হারুন অর রশিদ।