রাজধানীতে সতর্ক অবস্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাৎবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে দেশব্যাপী কয়েকদিন ধরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এর মধ্যে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রাজধানীজুড়ে আরও নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (১৫ আগস্ট) সকাল ৭টার দিকে রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে দেখা গেছে কঠোর নিরাপত্তা জোরদার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। অপরদিকে, শাহবাগ থেকে কারওয়ান বাজারমুখী রোডে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের সামনে সাঈদীর ভক্ত-সমর্থকরা জড়ো হওয়ায় বন্ধ রয়েছে যান চলাচল।
সোমবার (১৪ আগস্ট) রাত ৮টা ৪০মিনিটের দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সাঈদী। এরপর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে জড়ো হতে থাকেন সাঈদীর ভক্ত-সমর্থকরা। সাংবাদিকদের সঙ্গে তাদের টুকটাক ঝামেলাও হয়। এতে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। পুলিশের উপস্থিতিও বাড়তে থাকে। শুধু ঘটনাস্থলে নয়, পুরো রাজধানী জুড়েই বাড়ানো হয়েছে নিরাপত্তা।
ডিএমপি সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় শোক দিবস ১৫ আগস্টকে কেন্দ্র করে গত কয়েক দিন ধরে রাজধানীতে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এর মধ্যে সোমবার রাতে জামায়াত নেতা সাঈদীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হয়েছে। বিভিন্ন চেকপোস্টে তল্লাশি ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের বিষয়গুলোকে আরও গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। এক কথায় সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে পুলিশ।
সাঈদীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে রাজধানীজুড়ে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থার বিষয়ে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) ড. খ. মহিদ উদ্দিন বলেন, ‘রাজধানীর নিরাপত্তা সময় সময় জোরদার থাকে। ১৫ আগস্টের বিষয়ে আমরা সতর্ক আছি। পাশাপাশি সাঈদীর মৃত্যুর বিষয়ে আমরা চোখকান খোলা রেখেছি, সতর্ক অবস্থানে রয়েছি।’
এদিকে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে র্যাবের গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি এবং ইউনিফর্ম টহল বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া, র্যাবের টহল বা চেকপোস্ট জোরদার করতে ‘ডগ স্কোয়াড’ দিয়ে তল্লাশি কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন সোমবার রাতে এনটিভি অনলাইনকে এ তথ্য জানিয়ে বলেন, ‘মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধুর শাহাদাৎবার্ষিকী উপলক্ষে দেশব্যাপী দোয়া-মিলাদ মাহফিলের পাশাপাশি নানান কর্মসূচি রয়েছে। ফলে, যেকোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি মোকাবিলায় র্যাবের গোয়েন্দা ও টহল দল প্রস্তুত রয়েছে। সব ব্যাটালিয়নের দায়িত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে জনবল বাড়ানো হয়েছে। সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি ও ইউনিফর্ম টহল বৃদ্ধি করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীসহ অন্যান্য গণমান্য ব্যক্তিরা যেসব স্থানে যাবেন সেসব স্থানের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে সিসিটিভি ক্যামেরা ও ড্রোনের মাধ্যমে নিরাপত্তা নজরদারি নিশ্চিত করা হবে।’
অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় র্যাবের স্পেশাল ফোর্স প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ও নিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণে প্রস্তুতি আছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যাতে কেউ অপপ্রচার চালিয়ে কোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে না পারে এজন্য গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে যেকোনো বিশৃঙ্খলা দেখা দিলে জেলা বা মেট্রোপলিটন এলাকা বা থানাভিত্তিক স্থানীয় র্যাবের সহযোগিতা পেতে টহল ইনচার্জ অথবা দায়িত্বপ্রাপ্ত র্যাব ব্যাটালিয়ন অধিনায়ককে অবহিত করাসহ র্যাবকে জানানোর জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।