এই সরকার বিদেশিদের দিকে তাকিয়ে আছে : মির্জা ফখরুল
এই সরকার বিদেশিদের দিকে তাকিয়ে আছে অভিযোগ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘এই সরকারের পদত্যাগের মাধ্যমে নতুন দিগন্ত শুরু হবে। এই সরকার বিদেশিদের দিকে তাকিয়ে আছে। জনগণের উত্তাল তরঙ্গ তৈরি হলে কোনো বিদেশি এগিয়ে আসবে না।’
নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আজ শনিবার (১৯ আগস্ট) বিকেলে বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও বিদেশে উন্নত চিকিৎসার দাবিতে পদযাত্রাপূর্ব সমাবেশে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া শুধুমাত্র এই দেশে নয়, এই উপমহাদেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের অগ্রণী নেত্রী। তিনি প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা। এই কথা বললেই আওয়ামী লীগের গাত্রদাহ হয়। তিনি গৃহবধূ থেকে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। মিথ্যা মামলায় পাঁচ বছর বন্দি আছেন আমাদের নেত্রী। দুই কোটি টাকার সাজানো মামলা দেওয়া হয়। দুই কোটি টাকা আজকে আট কোটি টাকা হয়েছে।’
বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি অবিলম্বে দিতে হবে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যদি বন্দি অবস্থায় আমাদের নেত্রীর কিছু ঘটে তার সমস্ত দায় সরকারকে নিতে হবে। ডাক্তাররা বারবার বলে আসছেন উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে হবে। কিন্তু সরকার কর্ণপাত করছে না।’
সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. আব্দুল মঈন খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান প্রমুখ।
জনগণ জেগেছে, সরকারকে বিদায় করা হবে : মির্জা আব্বাস
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, ‘সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত নেতাকর্মীদের ইস্পাত কঠিন ঐক্য ধরে রাখতে হবে। সরকারকে সরানোর জন্য আন্দোলন চলছে। বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ। সরকার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করে গত দুটি নির্বাচন করেছে। আওয়ামী লীগ এখন বাংলাদেশকে তছনছ করতে ২০৪১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকতে চায়। তাদের পরিকল্পনা অনুযায়ী বেগম খালেদা জিয়াকে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তুলে কঠোর প্রতিরোধে সরকারকে সরানো হবে।
আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন প্রসঙ্গে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘বিদেশি প্রভুদের দয়ায় সরকারের শেষ রক্ষা হবে না, জনগণ জেগেছে, সরকারকে বিদায় করা হবে।’
শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে এই সরকারকে বিদায় করব : ড. মঈন খান
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান বলেছেন, ‘এক দফা দাবি, এই সরকারকে বিদায় নিতে হবে। আজ হোক, কাল হোক শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারকে বিদায় করব। আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে বিশ্বাসী। আওয়ামী লীগের মতো লগি-বৈঠার আন্দোলনে আমরা বিশ্বাস করি না। আন্দোলনের মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়াকে মামলা থেকে মুক্ত করতে বাধ্য করবো।’
বিচারকরা মার্কিন ভিসা নীতির আওতায় চলে আসছে : আমীর খসরু
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘বেগম খালেদা জিয়াকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে, তাঁকে জেলে পাঠানোর প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িতদের বিচার করা হবে। বিচারকরা মার্কিন ভিসা নীতির আওতায় চলে আসছে। এক দফার আন্দোলন সফল করে বিচার ব্যবস্থা, মানবাধিকার, গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে হবে।’
শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে না : গয়েশ্বর
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘জনগণের দাবি এক, শেখ হাসিনার পদত্যাগ। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে না। কদিন আগে সাঈদীর জানাজা তাদের পছন্দ মতো করতে দেওয়া হয়নি। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে আমাদের নেত্রীর জানাজাও আমরা দিতে পারব না। সুতরাং আমরা শেখ হাসিনার কাছে নেত্রীর মুক্তি চাই না। আমাদের নেত্রী আপসহীন। তার কর্মী আমরা। তার কর্মীরাও আপসহীন।’
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনার কাছে চিকিৎসা দাবি জানিয়ে লাভ নেই। শেখ হাসিনাকে বিদায় করে আমাদের নেত্রীর চিকিৎসা দিতে হবে।’
বেগম জিয়াকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে : নজরুল ইসলাম খান
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার ব্যাপারে কোনো আপস নাই। আমরা তাঁর মুক্তি চাই। সকল সুবিধা আছে এমন একটি হাসপাতালে তাঁকে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। তাঁকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে। অবিলম্বে তাকে সুচিকিৎসার সুযোগ দেওয়া হোক। আমরা এই সরকারের পতন ঘটাবোই।’