নির্বাচনের আগে মাঠ খালি করছে সরকার : মির্জা ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, প্রতিদিন দেশজুড়ে নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে কিছু পুলিশ সদস্য মামলা, গ্রেপ্তার ও হয়রানি অব্যাহত রেখেছে। প্রতিদিন পরিস্থিতি জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে। রাজনৈতিক পরিস্থিতি এটা ইঙ্গিত দেয়, যেভাবেই হোক সরকার বিরোধীদলকে মাঠ থেকে সরিয়ে আবার ক্ষমতায় যাবে। এটাই একমাত্র লক্ষ্য।
আজ রোববার (২০ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন অভিযোগ করেন।
গতকাল শনিবার নিখোঁজ হওয়া ছাত্রদলের ছয় নেতার প্রসঙ্গ তুলে ফখরুল বলেন, ‘ছাত্রদলের ছয় নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজকে অস্ত্র উদ্ধারের কথা বলা হয়েছে।’ অস্ত্রের ছবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রাগৈতিহাসিক আমলের অস্ত্র। আজকে ডিবি পুলিশ ব্রিফিং করে বলেছে বিএনপি নির্বাচন বানচাল করতে অস্ত্র জমা করছে। পুলিশের লোকজন এখন রাজনৈতিক ভাষায় কথা বলছে।’
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করেন, ‘হবিগঞ্জে জি কে গউসের বাসায় নেতাকর্মীরা আশ্রয় নিলে সেখানে পুলিশ গুলি করেছে। এ ছাড়া আহতদের হাসপাতালে যেতে বাধা দেয়া হয়।’ মির্জা ফখরুল বলেন, ‘পরিস্থিতি প্রতিদিন জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে। রাজনৈতিক পরিস্থিতি এটা ইঙ্গিত দেয় যেভাবেই হোক তারা বিরোধীদলকে মাঠ থেকে সরিয়ে যেকোনো ভাবেই হোক আবার ক্ষমতায় যাবে। এটাই একমাত্র লক্ষ্য।’
এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসী পার্টি। সরকারের নির্দেশে পুলিশ এসব করছে। আমরা বারবার বলেছি, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস চলছে। বিচারবিভাগ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও অন্যান্য বাহিনী একইভাবে কাজ করছে। আমাদের কাছে তথ্য আছে প্রয়োজনে আমরা দেখাব। বিচারপতিদের বলা হচ্ছে দ্রুত সাজার রায় দেওয়ার জন্য। অর্থাৎ, তারা পুরো মাঠ খালি করে দিতে চায়।’
ছাত্রদলের ছয়নেতাকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। বলা হয়েছে নির্বাচনের আগে অস্ত্র জমা করছে—এই প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এগুলো তারা যেন আরও বেশি করে করতে পারে সেজন্য এসব বলছে। এটা তো নতুন নয়। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, সন্ত্রাসের কথা। কিন্তু সন্ত্রাসটা কোথায় হলো? অস্ত্র তোমাদের হাতে, আইন তোমাদের হাতে। এগুলো রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস।’
ছাত্রদলের নেতাদের নিয়ে পুলিশের বক্তব্যকে সম্পূর্ণ বানোয়াট আখ্যা দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এগুলো ডাহা মিথ্যা। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’
ভারতের বার্তায় বিএনপি ভয় পেয়েছে—সরকারি দলের নেতাদের এমন বক্তব্যের জবাবে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমরা তো আন্দোলনে আছি। এই রিপোর্ট নিয়ে অথেনটিক কিছু এখনও দেখছি না।’
বিএনপির চেয়ারপারসনের শারীরিক অবস্থা নিয়ে ফখরুল বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া হাসপাতালে আছেন। তার চিকিৎসা চলছে। আন্দোলনের কর্মসূচি যখন দেয়া হবে আপনাদের জানানো হবে।’
সামনের দিনে রাজনৈতিক পরিস্থিতি আরও সহিংসতার দিকে যাচ্ছে কি না—এমন প্রশ্ন করা হলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকার কী চায় তার ওপর নির্ভর করবে। আমরা যে দাবি করেছি সরকারকে সেই দাবি বাস্তবায়ন করতে হবে। সরকার নিজেরা সন্ত্রাস সৃষ্টি করছে। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে নিয়মতান্ত্রিকভাবে আন্দোলন করছি।’