গরু চুরিতে বাধা দেওয়ায় খুন হন কৃষক বাবুল : পুলিশ সুপার
হবিগঞ্জের মাধবপুরে গরু চুরি করতে না পেরে গরুর মালিককে খুন করে দুর্বৃত্তরা। আজ শুক্রবার (২৫ আগস্ট) বিকেলে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসামির স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে এমন তথ্য জানান পুলিশ সুপার এস এম মুরাদ আলী।
পুলিশ সুপার জানান, গরুর মালিককে খুন করে হাত পা বেঁধে তাঁর মরদেহ ফেলে রাখে রঘুনন্দন পাহাড়ের দুর্গম জঙ্গলে। নিহত কৃষক বাবুল মিয়া (৪৮) ওই উপজেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়নের ইটাখলা গ্রামের মৃত ছায়েব আলী সর্দারের ছেলে। আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে হত্যাকাণ্ডের এমন লোমহর্ষক তথ্য দিয়েছেন গ্রেপ্তারর করা লাল মিয়া (৫০)।
পুলিশ সুপার আরও জানান, বাবুল মিয়া স্থানীয় একটি পোশাক কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। গত ১৫ জুলাই তিনি নিজেদের সাতটি গরু নিয়ে রঘুনন্দন পাহাড়ে ঘাস খাওয়াতে যান। সন্ধ্যায় গরুগুলো বাড়িতে ফিরলেও বাবুল মিয়া ফিরেননি। এরপর থেকে তাঁর পরিবারসহ স্বজনরা তাঁকে খোঁজতে বের হন। কিন্তু কোথাও সন্ধান পাননি। অবশেষে ১৮ জুলাই রঘুনন্দন পাহাড়ের বদনার মোড়া নামক গহিন জঙ্গলে তাঁর হাত, পা, গলা ও মুখ বাঁধা অর্ধগলিত মরদেহ পাওয়া যায়। সেখানে তারা লাশ গুম করার জন্য ফেলে রেখেছিল। এ ঘটনায় নিহত বাবুলের স্ত্রী মাহমুদা বেগম বাদী হয়ে মাধবপুর থানায় একটি মামলা করেন।
পুলিশ সুপার আরও জানান, ঘটনার কোনো ক্লু না থাকলেও প্রযুক্তি এবং বিশ্বস্ত সোর্স ব্যবহার করে ২৩ আগস্ট রাতে চুনারুঘাট উপজেলার শানখোলা ইউনিয়নের কালিনগর গ্রামের চেরাগ আলীর ছেলে লাল মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিনি জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফখরুল ইসলামের আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এতে তিনি বলেন, রঘুনন্দন পাহাড়ে গরু চুরি করতে যান তাঁরা। সেখানে গরু চুরিতে বাঁধা হওয়ায় বাবুল মিয়াকে তাঁরা হত্যা করেন। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত অন্যদের নামও তিনি প্রকাশ করেছেন। তাঁর স্বীকারোক্তি মতে গতকাল রাতে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আরও পাঁচজনকে চুনারুঘাটের দুর্গম এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁরা হচ্ছেন কালিনগর গ্রামের মো. বশির মিয়া, জিলু মিয়া ও সবুজ মিয়া এবং পানছড়ি আশ্রয়ণ এলাকার আব্দুল কাইয়ুম ও আব্দুল জব্বার। তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মাধবপুর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার নির্মলেন্দু চক্রবর্তীসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।