অর্থমন্ত্রী একজন বোবা মানুষ, তিনি কথাই বলেন না : জাপা মহাসচিব
‘অর্থমন্ত্রী একজন বোবা মানুষ, তিনি কথাই বলেন না’ বলে মন্তব্য করেছেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির মহাসচিব মো. মুজিবুল হক চুন্নু। আজ সোমবার (৪ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে তিনি অর্থমন্ত্রীর কাছে এক বিলিয়ন ডলার পাচার এবং ২৫২ কোটি টাকা মাফ করার বিষয়ে একটি বিবৃতি দাবি করে এ মন্তব্য করেন।
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে আলোচনার সুযোগ নিয়ে মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, ‘দেশের অর্থনীতি ভালোভাবে চলছে না। ডলারের সংকট, সরকার আমদানি নিয়ন্ত্রণ করছে। আমাদের রিজার্ভের সমস্যা। আমাদের রেমিট্যান্স কমে এসেছে। পত্র-পত্রিকায় দেখি টাকা পাচার হচ্ছে। এরমধ্যে কয়েকদিন আগে ডেইলি স্টারসহ বিভিন্ন পত্রিকায় দেখলাম এই অবস্থার মধ্যে একজন ব্যক্তির নাম এসেছে, যিনি বাংলাদেশের একজন বড় ব্যবসায়ী। তিনি কয়েকটি ব্যাংকের মালিক। তার সম্পর্কে এসেছে তিনি অন্য একটি দেশের নাগরিকত্ব নিয়ে সিঙ্গাপুরে মার্কেট করেছেন এবং এক বিলিয়ন ডলার দিয়ে হোটেল কিনেছে।’
জাপা মহাসচিব বলেন, ‘আমরা বারবার এই সংসদে অর্থমন্ত্রীকে বলছি, বাংলাদেশ থেকে টাকা পাচার হচ্ছে আপনি ব্যবস্থা নিন। কিন্তু, বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী একজন বোবা মানুষ, উনি কথাই বলেন না। যে দেশের অর্থমন্ত্রী কথা বলেন না, অর্থনীতির বিষয়ে পার্লামেন্টে কোনো ব্রিফিং দেন না, সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে সাংবাদিকদের কিছু জানান না, সেই দেশ কীভাবে চলবে আমি জানি না। আমার প্রশ্ন হলো, যার সম্পর্কে এক বিলিয়ন ডলার পাচারের অভিযোগ এসেছে, এটি সত্য কি-না? যদি সত্য হয়ে থাকে তাহলে এটা অবশ্যই দেশদ্রোহিতার শামিল। এটা নিয়ে হাইকোর্ট থেকে একটি রিটও করা হয়েছে। সেখানে হাইকোর্ট এন্টি করাপশন ডিপার্টমেন্টকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। সেটি নাকি আবার আপিল বিভাগে গিয়ে স্থগিত আছে।’
প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে মুজিবুল হক বলেন, ‘এই যে এত বড় একটি ঘটনার অনেক তথ্য প্রমাণসহ আমরা পড়েছি। এমন অনেক তথ্য দিয়েছে, যেগুলো অবিশ্বাস করাও সমস্যা। এই বিষয়টি খুবই গুরুতর রাষ্ট্রের জন্য। প্রধানমন্ত্রী, আপনি অর্থমন্ত্রীকে নির্দেশ দেন যে এই বিষয়টি জরুরি ভিত্তিতে তদন্ত করে দেখার জন্য। আসলেই কোনো বাংলাদেশি মানুষ কেউ এরকম এক বিলিয়ন ডলার সেখানে ইনভেস্ট করেছে কি-না। করলে বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে তিনি কীভাবে এই টাকাটা পেলেন, কোন সোর্স থেকে আনলেন। বাংলাদেশ থেকে না নিলে কীভাবে এলো? সেটা সরকার তদন্ত করে দেখতে পারে।’
‘একজন কৃষক যে লোন নেয় এক লাখ টাকা বা দুই লাখ টাকা, লোন না পরিশোধ করলে তার নামে ওয়ারেন্ট হয়’ উল্লেখ করে চুন্নু বলেন, ‘ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী লোন নিয়ে শোধ না করলে ওয়ারেন্ট হয়। একজন কৃষক যদি ঋণ দিতে না পারে তার সুদটা মাফ চায় ব্যাংকে আমরা সুপারিশ করি, তারা মাফ করে না। কিন্তু একটি নাসা গ্রুপের ঋণের ২৫২ কোটি টাকা সুদ মাফ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের চারটি রিজন আছে সুদ মওকুফ করার। এই চারটি রিজনের কোনোটির মধ্যেই এটি পড়ে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের অবজারভার আপত্তি দিয়েছেন এই সুদ মাফ করা যাবে না। তারপরও ২৫২ কোটি টাকা সুদ মাফ করা হলো একজন ব্যক্তি ইন্ড্রাস্ট্রির লোনের। যেখানে গরিবের একটা লোন নেওয়ার পর সুদ মাফ করা হয় না। আমি এসব বিষয়ে সংসদে বিবৃতি দাবি করছি।’