গজারিয়ায় জুট মিলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দুই শ্রমিকের মৃত্যু
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার হোসেন্দী ইউনিয়নের ভবানীপুরে আনোয়ার জুট মিলে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে দুই রড মিস্ত্রির মৃত্যু হয়েছে। এর আগেও গত ১ সেপ্টেম্বর একই মিলে দেওয়াল চাপা পড়ে আরেক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছিল। একের পর এক শ্রমিক মৃত্যুর ঘটনায় কোম্পানিটির কর্মপরিবেশ এবং শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সংশ্লিষ্টরা।
নিহতরা হলেন পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার রামগঞ্জবিলাসী গ্রামের ছেলে ফরহাদ হোসেনের ছেলে বেলাল হোসেন (১৯) ও একই গ্রামের তাহের তালুকদারের ছেলে আব্দুর রহিম মিয়া (১৬)।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আলম বলেন, নিহত বেল্লাল ও রহিম আমাদের সাথে কাজ করতো। আমরা সবাই হোসেন্দী ভবানীপুর এলাকার আনোয়ার জুট মিলের একটি ভবনের বেইজে রড বাঁধার কাজ করছিলাম। শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুর আড়াইটার দিকে আমরা কাজ সাময়িক বন্ধ রেখে কোম্পানির সীমানার ভেতর মেঘনা নদীতে গোসল করতে যাই। অসাবধানতাবশত একটি সাবমারসিবল পাম্পের তারের মাধ্যমে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয় তারা দুজন। তাদের উদ্ধার করে আমরা গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।
গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. তাপসী জান্নাত বলেন, দুপুর সাড়ে তিনটার দিকে আমাদের হাসপাতালে তাদের নিয়ে আসা হয়। প্রাথমিক পর্যবেক্ষণ শেষে আমরা তাদের মৃত ঘোষণা করি। হাসপাতালে আসার আগেই তারা মারা গিয়েছে। তাদের নিয়ে আসা লোকের মাধ্যমে জানতে পেরেছি তারা বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়েছিল। সাথে আসা লোকজন প্রথমে মারা যাওয়া দুজনের ভুল ঠিকানা দিয়ে আমাদের বিভ্রান্ত করতে চেয়েছিল। কিন্তু পরবর্তীতে তারা সঠিক ঠিকানা দেয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোল্লা সোহেব আলী জানান, লাশ বর্তমানে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আছে। খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থল এবং হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। বিস্তারিত পরে জানাতে পারব।
বিষয়টি সম্পর্কে কর্তৃপক্ষের বক্তব্য জানতে কোম্পানিটির গেটে যাওয়া হলে কোম্পানিটির সিকিউরিটি ইনচার্জ সাদিকুর রহমান বলেন, কর্তৃপক্ষের কেউ সাংবাদিকদের সাথে কথা বলতে চাচ্ছে না। নিহতদের ব্যাপারে আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই।
উল্লেখ্য, এর আগে গত ১ সেপ্টেম্বর এই একই কারখানার দেওয়াল ধসে রুবেল হোসেন (২৫) নামে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়। যথাযথ কর্ম পরিবেশ না থাকা এবং শ্রমিকদের ন্যূনতম নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে কাজে নিয়োগ দেওয়ারসহ অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।