দুই ছাত্রলীগনেতাকে মারধর, এডিসি হারুনের বিচার দাবি
রাজধানীর শাহবাগ থানায় ছাত্রলীগের দুই নেতাকে মারধরে সংশ্লিষ্ট পুলিশের রমনা বিভাগের এডিসি হারুন অর রশিদের বিচার দাবি করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ঘটনার প্রতিবাদে এবং হারুনের বিচার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন তারা। আজ রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।
মানববন্ধনে আরবি বিভাগের শিক্ষার্থী জি এম সাদী বলেন, ‘এডিসি হারুনের যে ঘটনাটি গতকাল আমরা জেনেছি সেটা হলো তার নৈতিক স্খলন। তার ব্যক্তিগত ঝামেলা নিয়ে সে সম্পূর্ণ অগণতান্ত্রিকভাবে, অনৈতিকভাবে আইনের বিরুদ্ধে গিয়ে, প্রশাসনিক পাওয়ার দেখিয়ে, নির্মমভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষার্থীকে অমানবিকভাবে নির্যাতন করেছে। যেটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষার্থী হিসাবে অমানবিক এই নির্যাতনের জন্য এডিসি হারুনের দেশের প্রচলিত আইনের অধীনে এনে সর্বোচ্চ বিচার দাবি করছি।’
ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ওয়ালি উল্লাহ বলেন, আগেও এডিসি হারুন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থী, আইনজীবী, সাংবাদিকের নির্মমভাবে পিটিয়েছেন এবং গতকালকে তিনি ঢাবির দুইজন শিক্ষার্থীকে অমানবিক নির্যাতন করেছেন। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমরা তার সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি।
আইয়ুব মোড়ল নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আপনি একজন সাধারণ মানুষকে কখনো হেনস্থা করতে পারেন না। সে যদি ভুল করে থাকে, তাহলে তাকে আইনের আওতায় আনতে পারেন। কিন্তু, আপনি নিজের হাতে আইন তুলে নিতে পারেন না। আমি এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।
মারধরের শিকার ছাত্রলীগের নেতারা হলেন—কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক হলের সভাপতি আনোয়ার হোসেন এবং ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় বিজ্ঞানবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ আহমেদ। এই দুজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ভুক্তভোগী ও তাদের সহপাঠীদের অভিযোগ, পুলিশের রমনা বিভাগের এডিসি হারুন অর রশিদ তাদের শাহবাগ থানায় নিয়ে বেদমভাবে পিটিয়েছেন। ছাত্রলীগের নেতা পরিচয় দেওয়ার পরও হারুনের সঙ্গে পুলিশের সদস্যরা তাদের পেটান।
পুলিশ সূত্র জানায়, এডিসি হারুনের সঙ্গে শাহবাগের একটি হাসপাতালে পুলিশের একজন নারী কর্মকর্তা আড্ডা দিচ্ছিলেন। সেখানে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নিয়ে ওই নারী কর্মকর্তার স্বামী হাজির হন। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে বাগ্বিতণ্ডা হয়। পরে এডিসি হারুন সেখান থেকে চলে যান।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশিদের নেতৃত্বে গত শনিবার রাতে ছাত্রলীগের দুই নেতাকে মারধর করা হয় বলে নেতাদের অভিযোগ। ঘটনার পর আজ রোববার দুপুরে এডিসি হারুনকে ডিএমপির রমনা বিভাগ থেকে দাঙ্গা দমন বা পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট বিভাগে সংযুক্ত করা হয়।