অপহরণের ১৪ দিন পর কলেজছাত্রের কঙ্কাল উদ্ধার
চট্টগ্রামের রাউজান থেকে অপহরণের ১৪ দিন পর কলেজছাত্র শিবলী সাদিকের কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়েছে। আজ সোমবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাউজান রাঙ্গুনিয়া-কাউখালী সীমান্ত এলাকার গহীন অরণ্যের পাহাড়ের চূড়া থেকে শিবলীর মাথার খুলি, পরনের গেঞ্জি, প্যান্ট উদ্ধার করা হয়। অপহরণের মূলহোতা উমংচিং মারমার গণপিটুনিতে মৃত্যু হয়েছে।
কলেজছাত্র শিবলী সাদিককে অপহরণের পর তার পরিবারের কাছ থেকে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণও আদায় করে অপহরণকারীরা।
পুলিশ জানায়, শিবলী সাদিক কদলপুর কলেজের শিক্ষার্থী। বাড়ি থেকে ১০০ মিটার দূরে ইলিয়াসের মুরগির খামারে ১০ হাজার টাকা বেতনে তত্ত্বাবধায়কের চাকরি করতেন। তাঁর অধীনে দুটি মুরগির খামারে ছয় উপজাতি (মারমা) তরুণ কাজ করতেন। খামারের কর্মচারী উমংচিং মারমার সঙ্গে কথা কাটাকাটি জের ধরে গত ২৮ আগস্ট তাঁকে অপহরণ করে উপজাতি তরুণরা। এরপর থেকে খোঁজাখুঁজি শুরু হয়।পরে বান্দরবানে পরিবারের কাছে ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে দুই লাখ টাকা আদায় করে। পুলিশের অভিযানে আটক মূলহোতার স্বীকারোক্তি মতে, আজ রাঙ্গুনিয়া-কাউখালী সীমান্ত এলাকার গহীন অরণ্যে পাহাড়ের চূড়া থেকে শিবলীর মাথার খুলি, পরনের গেঞ্জি, প্যান্ট উদ্ধার করে ফেরার পথে মূলহোতা উমংচিং মারমাকে ছিনিয়ে নিয়ে গণপিটুনি দিয়ে মেরে ফেলে উত্তেজিত জনতা।
এ সময় পুলিশের নয় সদস্য আহত হন বলে জানান, রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল হারুন।এর আগে র্যাব-৭ অভিযান পরিচালনা করে নগরীর চাঁদগাঁও এলাকা থেকে অপহরণের মূল হোতা উমংচিং মারমাসহ তাঁর দুই সহযোগীকে আটক করে। হৃয়দকে হত্যা করার কথা পুলিশের কাছে স্বীকার করেন উমংচিং। তাঁর দেওয়া তথ্যানুসারে আজ ভোরে কদলপুর ইউনিয়নের পাহাড়ি এলাকা থেকে শিবলীর কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়েছে। মরদেহের খণ্ডিতাংশ ও কঙ্কাল ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনায় সিবলী সাদিক হৃদয়ের মা নাহিদা আক্তার গত ৭ সেপ্টেম্বর বাদী হয়ে রাউজান থানায় খামারের ছয় মারমা কর্মচারীকে আসামি করে অপহরণের মামলা করেন। পরের দিন পুলিশ বেতবুনিয়ায় অভিযান চালিয়ে রাঙ্গামাটি জেলার কাউখালী থানার বেতবুনিয়া ইউনিয়নের আছুমং মারমা (২৬) ও কাপ্তাই থানার চিৎমরং ইউনিয়নের আমতলীনপাড়া গ্রামের উক্যথোয়াই মারমাকে (১৯) আটক করে। তাঁরা হৃদয়কে অপহরণের কথা স্বীকার করার পর মরদেহ উদ্ধারে নামে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, সিবলী সাদিক হৃদয়েকে হত্যা করে মরদেহ টুকরো টুকরো করে ফেলে অপহরণকারীরা। তাঁকে হত্যার কথা দ্রুত এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। মরদেহের অংশবিশেষ উদ্ধার করে নিয়ে আসার পথে তাঁর বাড়ির সন্নিকটে কয়েক হাজার উত্তেজিত নারী-পুরুষ পুলিশের গাড়ি থেকে আসামিকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। অতিরিক্ত পুলিশ, র্যাব, ডিবি পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে উত্তেজিত জনতাকে শান্ত করে।