হারুনকাণ্ডে তদন্ত প্রতিবেদন ফের পেছাল
শাহবাগ থানায় আটকে ছাত্রলীগের তিন নেতাকে নির্যাতনের ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময় আরও তিন কার্যদিবস বাড়িয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি)। এ নিয়ে সাময়িক বরখাস্ত পুলিশ কর্মকর্তা হারুন-অর-রশীদের বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময় তৃতীয়বারের মতো বাড়ানো হলো।
আজ রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাতে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) কে এন রায় নিয়তি বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, তদন্ত কমিটির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিবেদন জমা দিতে আবারও তিন কার্যদিবস সময়সীমা বৃদ্ধি করা হয়েছে।
এর আগে, তদন্ত কমিটি শাহবাগ থানায় আটকে ছাত্রলীগের তিন নেতাকে মারধরের ঘটনায় সাময়িক বরখাস্ত অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) হারুন-অর-রশীদের দায় পেয়েছে বলে জানা যায়। একইসঙ্গে এ ঘটনার নেপথ্যে পুলিশের এডিসি সানজিদা আফরিন, তার স্বামী রাষ্ট্রপতির সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) আজিজুল হক মামুন এবং ঘটনায় জড়িত ছাত্রলীগ নেতাদেরও দায় পাওয়া গেছে বলে জানা যায়।
প্রথমে নির্ধারিত সময়ে তদন্ত শেষ করতে না পারায় বাড়তি পাঁচদিনের সময় চেয়ে আবেদন করে কমিটি। এর ভিত্তিতে ডিএমপি কমিশনার সেই সময় দেন। বর্ধিত সময়ের শেষ দিন ছিল সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর)। এরমধ্যেই তদন্তকাজ শেষ করার কথা জানা গেলেও সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দিতে মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) আরও সাত দিনের সময় চেয়ে আবেদন করে কমিটি। ওই সময় তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে দ্বিতীয়বার তিন কার্যদিবস সময়সীমা বাড়ানো হয়। আজ রোববার (২৪ সেপ্টেম্বর) প্রতিবেদন জমা দেওয়ার তারিখ থাকলেও আবারও তদন্ত কমিটির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তৃতীয় দিনের মতো তিন কার্যদিবস সময়সীমা বাড়ানো হয়।
গত ৯ সেপ্টেম্বর রাতে বারডেম হাসপাতাল থেকে তুলে নিয়ে শাহবাগ থানায় আটকে ছাত্রলীগের দুই কেন্দ্রীয় নেতা এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নেতাকে ব্যাপক মারধর করা হয়। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, পুলিশের রমনা বিভাগের তখনকার এডিসি হারুন মারধরের নেতৃত্ব দেন। পরে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ ঘটনায় শাহবাগ থানার পরিদর্শক (অপারেশন) গোলাম মোস্তফাকেও দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
ঘটনার সূত্রপাতের বিষয়ে রাষ্ট্রপতির এপিএস আজিজুল হকের স্ত্রী ডিএমপির এডিসি (অতিরিক্ত উপকমিশনার) সানজিদা আফরিন এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, তিনি চিকিৎসা নিতে ওই দিন সন্ধ্যায় বারডেম হাসপাতালে গিয়েছিলেন। চিকিৎসকের সাক্ষাৎ পেতে তিনি সহকর্মী হিসেবে এডিসি হারুন অর রশিদের সহায়তা নেন। এ সময় কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে হাসপাতালে এসে এডিসি হারুনকে মারধর করেন তার স্বামী আজিজুল।
এই ঘটনা তদন্তে তিন সদস্যের একটি কমিটি করে ডিএমপি। কমিটির সভাপতি ডিএমপি সদর দপ্তরের উপপুলিশ কমিশনার (অপারেশনস) আবু ইউসুফ। অপর দুই সদস্য রমনা বিভাগের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (নিউমার্কেট জোন) শাহেন শাহ ও অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা-মতিঝিল বিভাগ) মো. রফিকুল ইসলাম।