দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করব : প্রধান বিচারপতি
বাংলাদেশের নবনিযুক্ত প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেছেন, ‘সংবিধান সংরক্ষণ করব, দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করব, সেই লক্ষেই আমি এবং আমার সহকর্মী বিচারপতিদের নিয়ে একসঙ্গে, একযোগে কাজ করব। যাতে বঙ্গবন্ধুর সংবিধান ও তাঁর নির্দেশিত পথেই আমরা থাকতে পারি।’
আজ বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) দুপুরে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের কাছে এ কথা বলেন তিনি।
প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতার জনক। তিনি আমাদের জাতির বিবেক। বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধুর যে অনন্য অবদান, সে অবদান থেকে বাঙালি জাতি কখনও বিচ্যুত হবে না। বাংলাদেশকে সাংবিধানিক পথে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’
প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, ‘আমি এবং আমার সহকর্মীরা বহুবার বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে এসেছি। আজ আমি বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি হিসেবে এসেছি। তখনকার অনুভূতি আর এখনকার এই অনুভূতি একই, তবে দায়িত্ব অনেক।’
পৃথিবীতে বাঙালি জাতি-রাষ্ট্র বলতে একটিই দেশ, আর সেটি হলো বাংলাদেশ। আর সেই বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা হচ্ছেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান উল্লেখ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘তিনি (বঙ্গবন্ধু) বাংলাদেশ দিয়ে গেছেন, আমাদের দেশ দিয়ে গেছেন—আর সেই দেশ পরিচালনার জন্য দিয়ে গেছেন একটি সংবিধান। আমি এবং আমার সহকর্মী বিচারপতিরা এই সংবিধান সংরক্ষণ করার শপথ নিয়েছি। প্রধান বিচারপতি হয়ে আবারও আমি (২৬ সেপ্টেম্বর) শপথ গ্রহণ করি। এই সংবিধান সংরক্ষণ করব, দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করব।’
এর আগে প্রধান বিচারপতি টুঙ্গিপাড়া বঙ্গবন্ধু সমাধি কমপ্লেক্সে পৌঁছে সমাধি সৌধের বেদিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করে বঙ্গবন্ধুর প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে তিনি বেদীর পাশে কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে বন্ধুর প্রতি গভীর সম্মান প্রদর্শন করেন। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে পবিত্র ফাতেহা পাঠ করে তিনি বঙ্গবন্ধু, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের শহীদ ও মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী ৩০ লাখ শহীদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন ।
এরপর প্রধান বিচারপতি বঙ্গবন্ধু সমাধিসৌধের প্রশাসনিক ভবনে যান। সেখানে সংরক্ষিত পরিদর্শন বইতে স্বাক্ষর করেন।
দুপুর পৌনে ৩টায় প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধ কমপ্লেক্স মসজিদে গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসন ও ইসলামী ফাউন্ডেশন আয়োজিত পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবীর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন। সেখানে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান, জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম বক্তব্য দেন।
এরপর ঈদে মিলাদুন্নবীর মিলাদ ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় আপিল বিভাগের বিচারপতি এম. এনায়েতুর রহীম, বোরহান উদ্দীন, মো. আশফাকুল ইসলাম, হাইকো্র্ট বিভাগের বিচারপতি নাঈমা রহমান, মামনুন রহমান, জিয়াউল করিম, মো. হাবিবুল গনি, ড. মোহাম্মদ বশির উল্লাহ, মো. আমিনুল ইসলাম, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল গোলাম রব্বানী, আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার মো. সাইফুর রহমান, উভয় বিভাগের বিচারপতি, গোপালগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ মো. কামরুল হাসান, জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম, পুলিশ সুপার আল-বেলী আফিফা, চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শাহাদাত হোসেন ভুইয়া, আইনজীবীসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।